ডালিম খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা জেনে নিন
ডালিম খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা জেনে নিন।আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমরা কম বেশি সকলেই ডালিম খেয়ে থাকি কিন্তু আমরা জানি না ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। সেজন্য আমরা যারা জানি না ডালিম খাওয়ার উপকারিতা - আমাদের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। আজকে আমাদের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো ডালিম খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা। ভরা রসালো ফল ডালিম এটি দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও সুস্বাদু। তবে ডালিম খুব একটা সস্তা না হওয়াতে অনেক এটি এড়িয়ে চলেন। চলুন নিম্নে জেনে নেই ডালিম খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা।
![]() |
ডালিম-খাওয়ার-উপকারিতা। ছবি - এআই |
টসটসে দানায় ভরা রসালো ফল ডালিম, যার ইংরেজি শব্দ Pomegranate. এটি দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমন সুস্বাদু। তবে ডালিম খুব একটা সস্তা না হওয়াতে অনেকে এটি খেতে পারেন না। ডালিম ফলের কিন্তু অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে সেগুলো জানা থাকলে খাবারের তালিকা থেকে এই ফল আর বাদ দিতে চাইবেন না। চলুন নিম্নে জেনে নেই ডালিম খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা সম্পর্কে।
ডালিম খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা
ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। ঔষধি ও ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক ফল ডালিমের রয়েছে জাদুকরী ১৫টি উপকারি গুণ - জানুন এ টু জেড। ডালিম ফল রোগীর পথ্য হিসেবে খুবই জনপ্রিয় এবং উপকারী। ডালিমের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে অবিশ্বাস্য ক্ষমতার জন্য একে স্বর্গীয় ফল বলা হলেও ভুল হবে না।
আরো পড়ুন: টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয়
ডালিম, বেদানা ও আনার - একই ফল, শুধুমাত্র অঞ্চল ভেদে এর নাম ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। ডালিম ফলের আদি নিবাস ইরাক এবং ইরান হলেও আমাদের দেশে প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। এর গাছের পাতা, ছাল, মূল সবগুলোই ঔষধি গুনে ভরপুর। ডালিম ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে গোলাপি, গাঢ় লাল বর্ণের হয়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, ডালিমের পুষ্টিমান, ঔষধি গুণ এবং ১৫ টি উপকারিতা সম্পর্কে।
ডালিম খাওয়ার উপকারিতা - ১৫টি
ডালিম ফল ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ পথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বিভিন্ন রকম পুষ্টিগুণের কারণে যুগ যুগ ধরে ডালিম বিভিন্ন রোগ উপশমে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ডালিম খেলে হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে, স্মৃতিশক্তি বাড়ে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, ব্যাকটেরিয়া দূর করে, আমাশয় নিরাময় করে, হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে এবং কৃমি দূর হয়।
১. ডালিম হার্ট ভালো রাখে
হার্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ডালিম ফল খেলে হার্ট ভালো থাকে। ডালিম রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনে এবং রক্তের এইচডিএল নামের কোলেস্টেরল সরবরাহ করে যা হাই ব্লাড প্রেসার কমিয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
![]() |
ডালিম-খাওয়ার-উপকারিতা। ছবি - এআই |
এছাড়াও ডালিমের ট্যানিন, পলিফেনলস ও এনেথোসায়ানিন্স পুষ্টিগুণের ভালো উৎস গুণের কারণে হার্ট সুস্থ এবং সবল থাকে। সুতরাং নিয়মিত ডালিম খেলে হৃদ রোগের আশঙ্কা দূরে থাকে।
২. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ডালিম
আমাদের সুস্থ থাকার জন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা অত্যন্ত জরুরী। কেননা আমাদের রক্তচাপ কমবেশি বা অনিয়ন্ত্রিত থাকলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ডালিম হতে পারে আপনার প্রাকৃতিক সমাধান।
আরো পড়ুন: নার্ভের রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
কেননা ডালিমের পুষ্টিগুণের মধ্যে পটাশিয়াম রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। সুতরাং আপনার শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে ডালিম খেতে পারেন।
৩. ডালিম স্মৃতিশক্তি বাড়াবে
যাদের স্মরণ শক্তি কম এবং ভুলে যাওয়া রোগ ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন তারা নিয়মিত ডালিম খেতে পারেন। কেননা ডালিমের ঔষধি গুণ আপনার স্মৃতিশক্তি বা মনে রাখার ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। আ্যালঝেইমারস রোগীদের জন্য ডালিম একটি বিশেষ উপকারী ফল। এক গবেষণায় দেখা গেছে, টানা ৪ সপ্তাহ বা ১মাস ডালিমের রস খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। সুতরাং বড়দের পাশাপাশি শিশুদের খাবার তালিকায়ও নিয়মিত ডালিম রাখতে পারেন।
৪. হাড়ের ব্যথা দূর করবে ডালিম
যারা হাড়ের ব্যথা বা আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগছেন তাদের জন্য ডালিম হতে পারে উপকারী সমাধান। দেখা গেছে, ডালিমের ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ উপাদান হাড়ের ব্যথা এমন কি হাড়ের সংযোগস্থলের ব্যথা উপশম করতেও সক্ষম। সুতরাং কারো হাড়ের ব্যথার সমস্যা থাকলে নিয়মিত ডালিম খেতে পারেন। আশা করি ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
৫. ডালিম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আপনি যদি প্রায় অসুস্থতায় ভুগে থাকেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। তাই কোন দুশ্চিন্তা বা তাড়াহুড়ো না করে হাতের নাগালেই আপনি প্রাকৃতিক উপাদান ডালিম ফল দিয়ে নিজে নিজেই সমাধান করে নিতে পারেন। কেননা ডালিমের রসে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস প্রতিরোধে গুনাগুন। তাই ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত সংক্রমণে আপনি আক্রান্ত হলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এজন্য আপনি নিয়মিত ডালিম ফলের রস খেলে সুস্থ ও সবল থাকবেন। সুতরাং নিঃসন্দেহে ডালিম আর আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম।
আরো পড়ুন: ভাইরাস জ্বরের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
৬. কর্মক্ষমতা বাড়ায় ডালিম
যারা জীবিকার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে থাকেন তাদের জন্য শারীরিক শক্তির প্রয়োজন। এজন্য ডালিম হতে পারে তার উপকারী বন্ধু। যেকোনো পরিশ্রম করার পূর্বে ডালিমের রস খেলে শরীরে বাড়তি উত্তম অনুভূত হয়। ফলে কাজ করতে তেমন কোন অসুবিধা হয় না। এছাড়াও ডালিমে নাইট্রেট থাকার কারণে আমাদের শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এজন্য যারা ব্যায়াম করেন কিংবা অ্যাথলেট তারা ব্যায়াম করার আধাঘন্টা আগে এক কাপ ডালিমের রস খেয়ে নিতে পারেন। এতে শরীরের রক্ত প্রবাহ ভালো থাকবে এবং পেশি শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
৭. ডালিম রক্তশূন্যতা দূর করে
ডালিমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায় যা দেহের রক্তশূন্যতা রোধ করতে সক্ষম। এজন্য যারা এনিমিয়া রোগে ভুগছেন বা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত ডালিমের রস খেলে বেশ উপকার পাবেন। কারণ ডালিমের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। আশা করি ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন
৮. ক্যান্সার প্রতিরোধক ডালিম
উপাদান ডালিমে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ যা কোষের ফ্রী রেডিকেল তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে দেহে ক্যান্সারের সেল সৃষ্টিতে বাধা দেয়। বিশেষ করে মূত্রনালীর ক্যান্সার দমনে ডালিমের ভূমিকা অপরিসীম। এছাড়াও ডালিম স্তন ক্যান্সার ও ফুসফুসের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে দারুণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, দেহের কোন কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ডালিমের রস তা সহজেই সারিয়ে তুলতে পারে।
৯. ডালিম ডায়াবেটিসে উপকারী
ডালিম একটি সুমিষ্ট ফল হলেও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডালিম ফলকে প্রাকৃতিক ইনসুলিন বলা যেতে পারে। কারণ ডালিমে রয়েছে ডায়েট্রি ফাইবার যা রক্তের কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাই যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তারা নিশ্চিন্তে এই ফলটি খেতে পারেন। তবে এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে ডালিম খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খাওয়া উচিত।
১০. কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাবে ডালিম
এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডালিম ফলের রসে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম, ফসফেট ও অক্সালেট রক্তের ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এ কারণে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
১১. ডালিম ঠান্ডা - কাশি দূর করে
ডালিমের মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী ভিটামিন সি গুণ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে শরীরকে করে শক্তিশালী। এর ফলে শরীরকে ঠান্ডা ও কাশির প্রকোপ থেকে মুক্তি দেয়। সুতরাং নিয়মিত ডালিম খেলে ঠান্ডা কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
১২. ত্বক সতেজ রাখবে ডালিম
ডালিমের রসে কোলাজেন এবং আ্যালাস্টিন উপাদান রয়েছে। যার ফলে ডালিমের রস আমাদের ত্বকে দাগ, ছোপ ও বলিরেখা পড়তে বাধা দেয়। ফলে ত্বকের কোষকে দীর্ঘায়ু করে তোলে। এ কারণে আমাদের ত্বক সতেজ এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখায়।
১৩. ডালিম ব্রণ থেকে মুক্তি দেবে
সাধারণত কারো হজম ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটলে ত্বকে ব্রণ সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু ডালিম হজম প্রক্রিয়াকে বেশ সচল রাখে এবং পেট পরিষ্কার রাখে। এর ফলে ত্বকে ব্রণ হতে দেয় না। আর ডালিম ফল হল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল যা ত্বকের তেল গ্রন্থিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সুতরাং কেউ নিয়মিত ডালিম খেলে সে ব্রণ ও ব্রণের দাগ থেকে মুক্তি পাবে। আশা করি ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
১৪. চুল পড়া রোধ করবে ডালিম
ডালিম খেলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়, ফলে চুল পড়া কমে যায়। তাছাড়া ডালিমেরে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ উপাদান চুলের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে চুলকে করে তোলে আকর্ষণীয় ও ঝলমলে। সুতরাং চুলের যত্নে ডালিম নিয়মিত খেতে পারেন।
১৫. ডালিম ওজন কমায়
ডালিমে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং পুষ্টিগুণ উপাদান বিদ্যমান। প্রতিদিন কেউ ডালিম খেলে তার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের উপকারী পুষ্টিগুণ উপাদান প্রবেশ করে এবং শরীরের বিভিন্ন বিপাকীয় কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করে। এর ফলে শরীরে বাড়তি মেদ বা চর্বি জমা হতে দেয় না। এর ফলে ওজন থাকবে নিয়ন্ত্রিত।
আরো পড়ুন: অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
এছাড়াও ত্বকের আরো বহুবিধ উপকার রয়েছে। ডালিম শরীরের হাইড্রেশন ঠিক রেখে ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখে। ডালিম আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করে। এতে করে বমি এবং ডায়রিয়ার উপদ্রব অনেকটাই কমে যায়। ডালিম ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে আমাদের ত্বককে সুরক্ষা দেয় এবং এর এলার্জিক এসিড আমাদের ত্বকে টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থেকে মুক্তি দেয়। ডালিম ফলের পাশাপাশি এর খোসা, ফুল এবং পাতা আমাশয় নিরাময় করে, গর্ভপাতের আশঙ্কা দূর করে এবং পেটের কৃমি দূর করে থাকে।
ডালিমের পুষ্টিমান
অনেক ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে ডালিমের পুষ্টিমান, ঔষধি গুনাগুন এবং এর বহুবিধ ব্যবহার সম্পর্কে জানা যায়। দেখা গেছে, একটি ১০০ গ্রাম ডালিমে ৭৮ ভাগ পানি, ১.৫ ভাগ প্রোটিন, ০.১ ভাগ স্নেহ, ১৪.৫ ভাগ কার্বোহাইড্রেট, ০.৭ ভাগ খনিজ, ৫.১ ভাগ আঁশ, ১২ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১২ ভাগ পটাশিয়াম, ১৪ মিলিগ্রাম অক্সালিক এসিড, ৭০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ০.৩মিলিগ্রাম নায়াসিন, ০.৩মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন এবং ১৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ইত্যাদি রয়েছে।
আরো পড়ুন: লেবু খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা
একজন নারী গর্ভবতী হলে তার স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়তি খাবারের প্রয়োজন পড়ে। আর সেই খাবার গুলো যদি হয় ভিটামিন, খনিজ ও পুষ্টি সমৃদ্ধ তাহলে তো কোন কথাই নেই। এরমধ্যে ডালিম হতে পারে অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। ডালিম হল স্বাদে, গুনে অতুলনীয় পুষ্টিকর সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক উপাদান যা গর্ভবতী মায়ের পাশাপাশি শিশুর ভ্রূণের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
![]() |
গর্ভাবস্থায়-ডালিম-খাওয়ার-উপকারিতা। ছবি - এআই |
ডালিমের বিভিন্ন রকম ভিটামিন এবং খনিজ গর্ভবতী নারীর রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে, পাচনতন্ত্রকে ভালো রাখে, মাংসপেশীতে টান লাগা থেকে স্বস্তি দেয় এবং শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে বিশেষভাবে সহায়তা করে। সুতরাং গর্ভাবস্থায় সুষম খাদ্য তালিকায় ডালিম অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
FAQ: প্রশ্নোত্তর - ডালিম খাওয়ার উপকারিতা
১। প্রশ্ন: ডালিম কখন খাওয়া ভালো?
উত্তর: ডালিম সকালের নাস্তায়, দুপুরের খাবারের পর, সন্ধ্যায় এবং রাতের খাবারের পরে খাওয়া ভালো।
২। প্রশ্ন: ডালিম আর বেদানা কি একই?
উত্তর: হ্যাঁ, ডালিম আর বেদানা একই ফল। ডালিমকে আনার হিসেবেও অনেকে বলে থাকেন। অর্থাৎ ডালিম, বেদানা ও আনার - এই তিনটি একই ফল, শুধু অঞ্চল ভেদে নাম ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
৩। প্রশ্ন: ডালিমের ইংরেজি নাম কি?
উত্তর: ডালিমের ইংরেজি নাম হল Pomegranate (পোমেগ্রেনেট)।
৪। প্রশ্ন: গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়া যাবে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়া যাবে এবং উপকারী।
আরো পড়ুন: আঙ্গুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
৫। প্রশ্ন: গর্ভাবস্থায় দিনে কতটুকু ডালিম খাওয়া উচিত?
উত্তর: গর্ভ অবস্থায় দিনে ১টি ডালিম বা ১ গ্লাস ডালিমের রস খাওয়া উচিত।
সর্বশেষ কথা - ডালিম খাওয়ার ১৫ টি উপকারিতা
ডালিম অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও ভিটামিন সমৃদ্ধ উপকারী একটি ফল। এটি ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, অক্সালিক অ্যাসিড, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুনাগুন সমৃদ্ধ। ডালিম বা বেদানা খেলে আমাদের হার্ট সুস্থ থাকে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, ত্বক ও চুল সতেজ থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন উপকার করে থাকে। ভীষণ উপকারী এবং আমাদের দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফল ডালিম পরিমিত খাওয়া উচিত। বিশেষ প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খেলে আরো ভালো হয়। প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা ডালিম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি ডালিম খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা গুণ সম্পর্কে আপনারা ভালোভাবে জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। এ বিষয়ে কোনো মতামত থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে পারেন। লেখাটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকলে শেয়ার করার এবং আমাদের সাথে থাকার অনুরোধ রইলো। আজকের ডালিম খাওয়ার উপকারিতা লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক আন্তরিক ধন্যবাদ।।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url