দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়, দোয়া ও আমল

দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়, দোয়া ও আমল। প্রিয় পাঠক, আপনি কি দ্রুত চাকরি পাওয়ার উপায়, চাকরি পাওয়ার দোয়া, দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়, ভালো চাকরি পাওয়ার দোয়া, দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়, দোয়া ও আমল সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আজকের লেখাটি শুধু আপনার জন্য।
দ্রুত-সরকারি-চাকরি-পাওয়ার-উপায়-দোয়া
দ্রুত-সরকারি-চাকরি-পাওয়ার-উপায়-দোয়া। ছবি - এআই
দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়, দোয়া ও আমল সম্পর্কে অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আজকের এই লেখনীতে আপনাদের জন্য দ্রুত চাকরি পাওয়ার উপায়, দোয়া ও আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি লেখাটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাথেই থাকবেন। 

দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়, দোয়া ও আমল

বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল বেকারত্ব সমস্যা। অনেকে শিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত হয়েও কোন কর্ম ক্ষেত্রে সুযোগ না পেয়ে বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের জন্য একটি কর্মক্ষেত্র, কাজ অর্থাৎ জীবিকা নির্বাহের জন্য চাকরি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রিজিক একমাত্র সৃষ্টিকর্তা বা আল্লাহর কাছ থেকেই আসে। তাই রিজিকের জন্য বা চাকরির জন্য চেষ্টা করার পাশাপাশি সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া ও আমল করা উত্তম। দ্রুত সরকারি, বেসরকারি চাকরি পাওয়ার উপায় এর জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি বা টিপস অবলম্বন করতে হয়। চলুন তাহলে দ্রুত চাকরি পাওয়ার উপায় বা টিপস গুলো সম্পর্কে জেনে নিই।

চাকরির জন্য নিজেকে সঠিকভাবে তৈরি করা

চাকরি পাবার জন্য প্রথমেই নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করলেই হবে না, সাথে বাড়তি আরো শিক্ষা গ্রহণ ও কৌশল অবলম্বন করতে হবে। বর্তমানে মামা,  খালু, লবিং বা টাকা ছাড়া চাকরি হয় না, এমন ধারণা বা চিন্তা ভাবনা যারা করেন, তারা কখনোই চাকরি পাবেন না। আপনি যদি ধৈর্য্য সহকারে আল্লাহর উপর ভরসা রেখে আত্মবিশ্বাস নিয়ে মানসিকভাবে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি একটি সরকারি চাকরি পাবেন।

আমাদের দেশের অনেক লোকের ধারণা যে লেখাপড়া করে সরকারি চাকরি পাওয়া যায় না। অর্থাৎ কোন রাজনৈতিক নেতা বা ঘুষ ছাড়া কোন সরকারি চাকরি পাওয়া যায় না। কিন্তু নিয়ম মেনে সঠিক পদ্ধতিতে চাকরির আবেদন করলে এবং ঠিকমতো চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ভাইভা পরীক্ষা দিতে পারলে দ্রুত চাকরি পাওয়া সম্ভব। এজন্য হতাশ না হয়ে সঠিক ভাবে চাকরির জন্য চেষ্টা করতে হবে। তাই আপনি যদি চাকরির জন্য নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলেন এবং মানসিকভাবে চাকরি করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেন তাহলে অবশ্যই আপনি একটি সরকারি চাকরি পেয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ।

আকর্ষণীয় সিভি বা বায়োডাটা বা জীবন বৃত্তান্ত তৈরি করা

আপনি যখন নতুন চাকরি খুঁজবেন এবং নতুন চাকরির জন্য দরখাস্ত করবেন তখন আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা সম্পর্কে জানানোর জন্য একটি স্মার্ট ও আকর্ষণীয় সিভি বা জীবন বৃত্তান্ত তৈরি করতে হবে। অতি সাম্প্রতিক ব্যাকগ্রাউণ্ড সাদা বা আকাশী কালার ল্যাব প্রিন্ট ছবি, সম্ভব হলে টাই যুক্ত ছবি ব্যবহার করুন। সহস্তে দরখাস্ত আহবান করলে নিজের হাতে দরখাস্ত লিখুন, খেয়াল রাখুন লেখা যেন কাটাকাটি না হয় এবং বানান ভুল না হয়। 

এতে আপনার দরখাস্ত ও বায়োডাটা দেখেই চাকরিদাতা আপনার সম্পর্কে প্রায় ৯০ শতাংশ ধারণা পেয়ে যাবেন। সেই দরখাস্ত ও বায়োডাটা জমা দেওয়ার পূর্বে তা ফটোকপি করে নিজের কাছে সংরক্ষণ করে রাখুন যেন মৌখিক বা ভাইভা পরীক্ষার সময় আপনি সঠিক উত্তর দিতে পারেন। কেননা আপনার জমা দেওয়া দরখাস্ত ও বায়োডাটা দেখেই ভাইভা বোর্ডে পরীক্ষা করতে পারে এবং এতে আপনার উত্তর দেওয়া সহজ হবে। সুতরাং আপনার সিভি, বায়োডাটা, জীবন বৃত্তান্ত ও দরখাস্ত এমনভাবে তৈরি করুন যেন চাকরি দাতা প্রতিষ্ঠান অল্প সময়ের মধ্যে আপনার সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।

আপনি যেই চাকরির যোগ্য এবং নিজেকে উপযুক্ত মনে করেন, কেবলমাত্র সেই সকল পদে দরখাস্ত জমা দিন। প্রতিদিন দৈনিক পেপারগুলোতে বিশেষ করে দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক নয়াদিগন্ত, দৈনিক সমকাল ইত্যাদির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো খোঁজ করুন। প্রতি শুক্রবার সাপ্তাহিক চাকরির বিজ্ঞাপন, দৈনিক প্রথম আলোর চাকরি-বাকরি পৃষ্ঠা দেখুন। পাশাপাশি প্রতিদিন অনলাইনের চাকরি ডট কম, Bd jobs ইত্যাদিতে চোখ রাখুন। যারা আপনার মতো চাকরি প্রত্যাশী তাদের নিয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করুন, এতে অনেক কিছুর সমাধান পেয়ে যাবেন। ইতিমধ্যে যারা চাকরি পেয়ে গেছেন তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন এবং চাকরি পাওয়ার সিক্রেট টিপসগুলো জানার চেষ্টা করুন। এতে আপনার দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায় অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

দ্রুত সরকারি চাকরির জন্য যেভাবে পড়াশোনা করবেন

আজকাল সরকারি চাকরি একটি সোনার হরিণের মতো, সহজে ধরা দিতে চায় না। কিন্তু সরকারি চাকরির জন্য কিভাবে পড়াশোনা করবেন, এটা অনেকেই সঠিক ভাবে জানেন না। তাই সঠিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বাজারের যেন-তেন বই না পড়ে ভালো মানের চাকরির গাইড কেনা উচিত। তার সাথে বোর্ড বই পড়তে হবে। প্রতিদিন নিয়ম-মাফিক পড়াশোনা করে নিজেকে সরকারি চাকরির জন্য যোগ্য রূপে গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে সরকারি চাকরির পরীক্ষা প্রচুর প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা। সুতরাং সরকারি চাকরির যোগ্য রূপে গড়ে তোলার জন্য পড়াশোনার বিকল্প কিছু নেই।

শুধুমাত্র একটি সরকারি চাকরির পদের জন্য হাজার হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করে থাকে। তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করে আপনাকে টিকতে হবে। আর এর জন্য আপনাকে সর্বোচ্চ নাম্বার পেতে হবে তাহলেই আপনি চাকরির যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। আর এসব প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষার কোন সিলেবাস থাকে না। তারপরও বিগত বছরগুলোর প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে অনেকটাই পরীক্ষার ধারণা পাওয়া যায়। এসব দিক বিবেচনা করে আপনাকে পরীক্ষা প্রস্তুতি নিতে হবে।

দেখা গেছে, সাধারণত যে কোন চাকরির পরীক্ষার বিষয়গুলোতে বাংলা, অংক, ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞান - এ বিষয়গুলো থেকে প্রশ্নপত্র হয়ে থাকে। এজন্য বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নপত্রের কথা মাথায় রেখে আপনাকে চাকরির প্রস্তুতি নিতে হবে। সাথে সাম্প্রতিক বিষয় যেমন- বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা রাখতে হবে। আর যেই মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের অধীন পরীক্ষা দিবেন, সেই মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট খুঁটিনাটি তথ্য আপনাকে জেনে রাখতে হবে। কেননা, আপনি ঐ অধিদপ্তর সম্পর্কে কতটা জানেন বা চাকরির জন্য আপনি কতটা সিরিয়াস তা সহজেই তারা বুঝতে পারবে। তাহলে চলুন বিষয় ভিত্তিক প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই। 

বাংলা বিষয়ের প্রস্তুতি

সাধারণত সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন পত্রগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সিলেবাস থেকে প্রশ্ন করা হয়। এজন্য ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ভোট বইগুলোর বাংলা সাহিত্য ও ব্যাকরণ অংশ আপনাকে ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে।

বাংলা সাহিত্যের অংশ হিসেবে সকল গল্প ও কবিতার উৎস, কবি পরিচিতি ও পটভূমি ইত্যাদি অংশগুলো আপনাকে ভালোভাবে পড়ে মনে রাখতে হবে। বাংলা সাহিত্যের এই অংশে কবিতার নাম, কবির নাম, লেখক এর নাম, জন্মতারিখ, পরিচিতি ইত্যাদি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। আপনি যদি এ সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন তাহলে আপনি এখান থেকে পূর্ণ মার্ক পেয়ে যাবেন। বিশেষ করে জাতীয় কবি, পল্লী কবি, বিশ্বকবি, নোবেল বিজয়ী ইত্যাদি লেখকের নাম ও ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।

বাংলা বিষয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বাংলা ব্যাকরণ। ব্যাকরণের এই অংশে আপনাকে সমাস, সন্ধি, কারক, বিভক্তি, এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা, উপসর্গ, অনুসর্গ, লিঙ্গ, একবচন, বহুবচন, ক্রিয়ার কাল, বিরাম চিহ্ন, সারাংশ ও রচনা-প্রবন্ধ মনে রাখতে হবে। সাধারণত এসব থেকেই বাংলা ব্যাকরণ প্রশ্ন হয়ে থাকে। আপনি যদি সঠিকভাবে সকল উত্তর দিতে পারেন তাহলে এখান থেকেও পূর্ণ মার্ক পেয়ে যাবেন। তাতে আপনার দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায় অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
দ্রুত-সরকারি-চাকরি-পাওয়ার-উপায়-দোয়া
দ্রুত-সরকারি-চাকরি-পাওয়ার-উপায়-দোয়া। ছবি - এআই

অংক বিষয়ের প্রস্তুতি

আপনি যদি দ্রুত সরকারি চাকরি পেতে চান তাহলে অংক বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই ভালো করতে হবে। কেননা এখানে ছোট ছোট প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আপনি পুরনো মার্ক পেয়ে যাবেন। এখানেও আপনাকে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে নবম-দশম শ্রেণীর গণিত বই ফলো করতে হবে। অবশ্য এই বিষয়ের মধ্যে পাটিগণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতি - তিনটি অংশ ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে।

পাটিগণিত অংশের মধ্যে রয়েছে সরল অংক, ভগ্নাংশ, লাভ-ক্ষতি, মুনাফা, সুদ, ঐকিক নিয়ম, অনুপাত-সমানুপাত, লসাগু-গসাগু, সংখ্যার ধারণা ইত্যাদি। পাটিগণিতের এসব খুঁটিনাটি অংশ আপনাকে ভালোভাবে জেনে রাখতে হবে, যেন খুব সহজেই আপনি উত্তর দিয়ে পূর্ণ মার্ক পেয়ে যান।

বীজগণিত অংশে রয়েছে বীজগাণিতিক রাশিমালা, সূত্রের প্রয়োগ, মান নির্ণয়, প্রমাণ, লসাগু, গসাগু, উৎপাদকে বিশ্লেষণ, সময় ও গতিবেগ, ধারা ইত্যাদি। বীজগণিতের খুঁটিনাটি অংশ গুলো আপনাকে ভালোভাবে আয়ত্তে রাখতে হবে যেন এখানেও সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আপনি পূর্ণ মার্ক পেয়ে যান।
গণিতের জ্যামিতি ও পরিমিতি অংশে সাধারণত সমপাদ্য, উপপাদ্য, ক্যালকুলাস, ত্রিকোণমিতি, লেখচিত্র ও পরিসংখ্যান বিষয়ে প্রশ্ন হয়ে থাকে। আপনি যদি গণিতের এই অংশ থেকে পূর্ণ মার্ক পেতে চান তাহলে অবশ্যই এ সকল বিষয়ে আপনাকে একটা পূর্ণ ধারণা রাখতে হবে। তাই গণিত বিষয়ের জন্য আপনাকে নিয়মিত অংক চর্চা বা প্র্যাকটিস করতে হবে।

ইংরেজি বিষয়ের প্রস্তুতি

বাংলা বিষয়ের মতই ইংরেজি বিষয়ের প্রস্তুতি। তবে আমাদের দেশের ছাত্র ছাত্রীরা সাধারণত ইংরেজিতে ভয় পেয়ে থাকে। কেননা এটি একটি বিদেশী ভাষা। ভালোভাবে বুঝে পড়াশোনা করলে ইংরেজি বিষয়ে ভয় হওয়ার কোনো কারণ নেই। বাংলা বিষয়ের মত এখানেও সাহিত্য এবং গ্রামার অংশ রয়েছে। ইংরেজি সাহিত্যের ক্ষেত্রে গল্প, কবিতা, নাটক এবং কবি-সাহিত্যিকদের নাম মনে রাখতে হয়। আর ইংরেজিতে গ্রামার অংশে Parts of Speech যেমন Noun, Pronoun, Adjective, Verb, Adverb, Preposition, Articles, Idioms and Phrase, Vocabulary, Sentence, ,Gender, Number, Translation ইত্যাদি বিষয় আয়ত্ত করলে আপনি খুব সহজেই উত্তর দিতে পারবেন এবং পূর্ণ মার্কস পেয়ে যাবেন।

সাধারণ জ্ঞান বিষয়ের প্রস্তুতি

বাংলা, অংক ও ইংরেজি বিষয়ের মোটামুটি একটা ধারণা পাওয়া গেলেও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ের সঠিক সিলেবাস নেই বললেই চলে। এজন্য আপনাকে নির্মিত বাংলা ও ইংরেজি খবরের কাগজ পড়তে হবে। পাশাপাশি নিয়মিত টেলিভিশনের খবর দেখতে হবে ও শুনতে হবে। অবশ্য সাধারণ জ্ঞান বিষয় কয়েকটি দিক থেকে প্রশ্ন করা হয়। যেমন বাংলাদেশ প্রসঙ্গ, আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ, খেলাধুলা প্রসঙ্গ, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় রাজনৈতিক খবরা খবর ইত্যাদি।

বাংলাদেশ বিষয়াবলীর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক, প্রাচীন শাসন আমল, বাংলাদেশের উৎপত্তি ইতিহাস, জন্মহার মৃত্যুহার, শিক্ষার হার, ভাষা আন্দোলন, মাথাপিছু গড় আয়, থানা, জেলা, উপজেলা ও বিভাগ সংখ্যা ইত্যাদি। তাছাড়া আদিবাসীদের বাসস্থান, ধর্ম, সংস্কৃতি, পোশাক বিচার, বাংলাদেশের বাজেট, জাতীয় পুরস্কার, বিভিন্ন জাতীয় দিবস, ভৌগোলিক অবস্থান, নদী বন্দর,  সমুদ্র বন্দর, খনিজ সম্পদ,  চলচ্চিত্র বিষয়ক তথ্যসমূহ আপনার জানা উচিত।

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর মধ্যে বিভিন্ন দেশের রাজধানীর নাম, মুদ্রার নাম, বিখ্যাত প্রণালী, বিভিন্ন স্থাপনা, ঐতিহাসিক স্থান, আবিষ্কার এবং ব্যক্তিবর্গের পরিচয় ইত্যাদি রয়েছে। কাজেই আপনি যদি সাধারণ জ্ঞান বিষয়ের প্রস্তুতি নিতে চান তাহলে এসব বিষয়ে আপনাকে একটা সম্যক ধারণা রাখতে হবে। সব সময়ই আপনাকে আপডেট থাকতে হবে। এতে আপনার দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায় অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

দ্রুত চাকরি পাওয়ার দোয়া ও আমল

আমাদের মনে রাখতে হবে, রিজিকের একমাত্র মালিক মহান আল্লাহ তা'য়ালা। এই রিজিক কারো কারো ব্যবসা-বাণিজ্য বা চাকরির মাধ্যম থেকে হয়ে থাকে। তাই চাকরির জন্য বিভিন্ন চেষ্টা ও শ্রমের পাশাপাশি অবশ্যই মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা বা দোয়া করতে হবে। তাঁর কাছে মন খুলে দোয়া করলে তিনি একটি রিজিকের ব্যবস্থা অবশ্যই চাকরির মাধ্যমে করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।

আজকাল অনলাইনে প্রচুর চাকরি পাওয়ার দোয়া হয়তো পেতে পারেন কিন্তু সেগুলোর কোন ভালো রেফারেন্স বা শুদ্ধতা নেই। একথা বিবেচনা করে আপনাদের সামনে দ্রুত চাকরি পাওয়ার দোয়া ও আমল সম্পর্কে বিস্তারিত নিয়ে এসেছি। যেন চাকরিপ্রার্থীগণ খুব সহজেই সঠিক এবং শুদ্ধ আমল টুকু করতে পারেন। এতে আপনাদের মনোবল দৃঢ় হবে এবং মহান আল্লাহ তায়ালা আপনার উত্তম রিজিক হিসেবে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, দ্রুত সরকারি চাকরি লাভের দোয়া ও আমল সম্পর্কে।

দ্রুত চাকরি পাওয়ার দোয়া

মহান আল্লাহ তায়ালা আল-কোরআনের সূরা কাসাস এ চাকরি প্রাপ্তি হিসেবে একটি দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। এই দোয়াটি আল্লাহর নবী ও রাসূল মুসা আলাইহিস সালাম করেছিলেন।

আরবি উচ্চারণ:
رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
বাংলা উচ্চারণ:
রাব্বি ইন্নি লিমা আনজালতা ইলাইয়া মিন খাইরিন ফাকির।
বাংলা অর্থ:
হে আমার পালনকর্তা! তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ পাঠাবে, আমি সেটার মুখাপেক্ষী। (সূরা আল- কাসাস: আয়াত নং ২৪)

আল্লাহর নবী ও রাসূল মুসা আলাইহিস সালাম তৎকালীন মিশরের নিষ্ঠুর ও কাফের বাদশাহ ফেরাউনের রোষানলে পড়ে মিশর থেকে দূরে মাদায়িন শহরে গিয়ে পৌঁছান। সেখানে তার কোন আশ্রয় কিংবা জীবন জীবিকার কোন সংস্থান বা চাকরি ছিল না। সেখানে তার বেঁচে থাকার জন্য আশ্রয়, কাজ, কর্মসংস্থান ও চাকরির প্রয়োজন ছিল। তারপর তিনি সেখানে মহান আল্লাহর দরবারে উপরোক্ত দোয়া করে জীবিকা এবং আশ্রয় প্রার্থনা করলেন। 

মহান আল্লাহ তায়ালা তার উপর সন্তুষ্ট হলে আল্লাহর পক্ষ থেকে উত্তম কর্মক্ষেত্র, আশ্রয়, জীবিকা এবং চাকরি লাভ করেছিলেন। সুতরাং যাদের উত্তম জীবিকা, দ্রুত সরকারি চাকরি, কর্মক্ষেত্র এবং আশ্রয় এর প্রয়োজন, তাদের উচিত সার্বিক চেষ্টা এবং প্রচেষ্টার পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে উপরোক্ত দোয়ার মাধ্যমে সহযোগিতা কামনা করা। মহান আল্লাহ তায়ালা হয়তো সন্তুষ্ট হয়ে একটি উত্তম জীবিকা সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।

দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার আমল

একটি ভালো সরকারি চাকরি পেতে হলে নানা ধরনের অসুবিধা এবং বাধার সম্মুখীন হতে হয়। সকল বাধা বিপত্তি পার করে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে ও দোয়া করে চাকরির পরীক্ষা দেওয়া উচিত। মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯টি নামের মধ্যে গুণবাচক নামের আমল করা এবং বেশি বেশি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দরুদ পাঠ করা উচিত। মহান আল্লাহর গুণবাচক নামের মধ্যে একটি হল-

আরবি উচ্চারণ: يَا وَهَّابُ
বাংলা উচ্চারণ: ইয়া ওয়াহহাবু
বাংলা অর্থ: কোনরূপ প্রতিদান ব্যতীত অধিক দানকারী। (এটি মহান আল্লাহ তায়ালার একটি গুণবাচক নাম)
ইসলামী চিন্তাবিদ ও ইসলামী বিশেষজ্ঞগণ বলেন, যারা অধিক পরিমাণে এই يَا وَهَّابُ নাম আমল করবেন মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের রিজিকের বরকত দান করবেন। এমন কি তাদের কোন অভাব-অনটন এবং জীবন জীবিকার প্রয়োজন থাকলে দ্রুত সবকিছুর সমাধান করে দেবেন ইনশাল্লাহ।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি দক্ষতা অর্জন করা

একজন চাকরি প্রত্যাশীর অনলাইন ভিত্তিক দক্ষতা অর্জন অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীর চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে। যেহেতু বর্তমান কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের যুগ সেহেতু আজকাল অনেক কাজ কম্পিউটারের মাধ্যমে বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনাকে উইন্ডোজ অফিস, এক্সেল, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ইমেইল, টাইপিং ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এসব দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার উপরও দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। তাতে আপনার দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায় অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরিপ্রার্থীকে অবশ্যই ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। ভাইভা পরীক্ষার মুখ্য উদ্দেশ্য হলো চাকরি প্রার্থীর আচার-আচরণ, শারীরিক গঠন, পোশাক-পরিচ্ছদ, বাচন ভঙ্গি ও তার মন-মানসিকতা যাচাই বাছাই করা। ভাইভা পরীক্ষার সময় সাদা ধরনের ফুলহাতা শার্ট এবং কালো ধরনের প্যান্ট ও কালো ধরনের জুতা পরে মার্জিত হয়ে ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত হবেন। ফুলহাতা শার্ট কখনোই ফোল্ডিং বা মোড়াবেন না এবং চুলগুলো মাঝারি গোছের ভদ্রভাবে রাখতে হবে। এসব বিষয়ে উপযুক্ত মনে হলে এবং আপনার সরকারি চাকরি করার মন মানসিকতা প্রবল থাকলে আপনি সহজেই একটি সরকারি চাকরি পেতে পারেন।

ভাইভা পরীক্ষায় সাধারণত আপনার নাম, আপনার নামের অর্থ, আপনার নামের সঙ্গে মিল আছে এমন একজন বিখ্যাত ব্যক্তির নাম, আপনার জেলার নাম, আপনার জেলায় একজন বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের নাম, আপনার জেলায় বিখ্যাত একটি জায়গার নাম, খাবারের নাম, ঐতিহ্য কোন কিছু থাকলে সে বিষয়ে আগে থেকেই জেনে নেওয়া উচিত। এই চাকরিটা কেন আপনার দরকার বা আপনাকে কেন চাকরিটা দেওয়া উচিত সে বিষয়ে সুন্দর একটি তথ্যমূলক উত্তর আপনাকে দিতে হতে পারে। মোটকথা, আপনি যা ই উত্তর দেন না কেন, তাদেরকে বোঝাতে হবে- চাকরিটি আপনার খুবই প্রয়োজন।

আপনি যেই দিন ভাইভা পরীক্ষা দিচ্ছেন সেই দিন ইংরেজি, বাংলা, আরবি তারিখ, সেইদিনে হঠাৎ কিছু ঘটে যাওয়া পূর্বের বা বর্তমান কোন ঘটনা থাকলে সেটি সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত। মনে রাখবেন, সকল প্রশ্নের উত্তর একজন মানুষের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। তবে যেগুলো প্রশ্ন আপনি পারবেন না সেগুলো বিনীতভাবে বলে দেবেন যে, এই মুহূর্তে আমার উত্তরটি মনে আসছে না স্যার। সর্বোপরি আত্মবিশ্বাস নিয়ে এবং নার্ভাস বা হতাশ না হয়ে সকল প্রশ্নের উত্তর সুন্দর স্বাভাবিকভাবে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন, কোনভাবেই রাগান্বিত হওয়া এবং অপ্রাসঙ্গিক উত্তর দেওয়া যাবে না। এভাবে আপনার দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায় অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
আরো পড়ুন:

সর্বশেষ কথা - দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়, দোয়া ও আমল

প্রিয় পাঠক, দ্রুত সরকারি চাকরি পেতে হলে শারীরিক, মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে ধৈর্য্য সহকারে চেষ্টা করতে হবে। আপনি বিষয় ভিত্তিক প্রস্তুতি নিয়ে মহান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রেখে চেষ্টা করতেই থাকেন, তাহলে দ্রুত একটি সরকারি চাকরি পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। এতক্ষণ আমরা দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়, দোয়া ও আমল বিষয়ে সকল তথ্যসহ বিস্তারিত জানলাম। আশা করি, লেখাটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। লেখাটি পড়ে আপনি প্রকৃত হয়ে থাকলে আপনার বন্ধু বান্ধবদের কাছে শেয়ার করার অনুরোধ রইল। এ বিষয়ে আপনার কোন মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url