পি আর পদ্ধতি: যা নির্বাচনে জনপ্রিয়তার গোপন কৌশল
পি আর পদ্ধতি: যা নির্বাচনে জনপ্রিয়তার গোপন কৌশল।আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক আপনি কি পি আর পদ্ধতি নির্বাচন কি? পি আর পদ্ধতিতে কোন কোন দেশে নির্বাচন হয়, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি কি, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব কি, পিআর পদ্ধতি কি ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আজকের পি আর পদ্ধতি: যা নির্বাচনে জনপ্রিয়তার গোপন কৌশল শিরোনামের লেখাটি পড়ার অনুরোধ রইল।
![]() |
পি-আর-পদ্ধতি-কি। ছবি - গুগল |
পি আর পদ্ধতি বর্তমানে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। আধুনিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনের সাফল্য কেবলমাত্র বক্তৃতা বা প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করে না বরং জনগণের সাথে জননেতার জনসংযোগ পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে। অর্থাৎ জনগণের সমর্থনের মাধ্যমে একজন নেতা নির্বাচিত হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। ফলে সেই নেতা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ থাকেন। কিন্তু নেতা যদি সংখ্যানুপাতিক হারে বা আনুপাতিক হারে নির্বাচিত হন তাহলে কেমন হয়? কিন্তু অনেকেই এই পি আর পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না। তাহলে চলুন পি আর পদ্ধতি কি এবং পি আর পদ্ধতি নির্বাচনে জনপ্রিয়তার গোপন কৌশল হিসেবে কিভাবে কাজ করে সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
পি আর পদ্ধতি: যা নির্বাচনে জনপ্রিয়তার গোপন কৌশল
পি আর পদ্ধতি নির্বাচনে জনপ্রিয়তা অর্জনের মূল কৌশল। পি আর পদ্ধতি এর গুরুত্ব, ধাপ, উদাহরণ এবং প্রভাব জানুন - ভোটারের মন জয় করার রহস্য! এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রার্থী ভোটারদের আস্থা তৈরি করেন, নিজের ভাবমূর্তি গঠন করেন এবং কার্যকর ভাবে সঠিক বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেন। তাই পি আর পদ্ধতি: যা নির্বাচনে জনপ্রিয়তার গোপন কৌশল কেবল একটি শব্দ বন্ধ নয় বরং এটি একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াও। ফলে অনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা গণতন্ত্রের সঠিক পথ। অর্থাৎ ভোটারের প্রত্যেকটি ভোট বিশেষভাবে মূল্যায়ন হবে, যা পূর্বের নির্বাচনী ব্যবস্থায় উপেক্ষিত হত। তাহলে আমাদের প্রথমেই জানতে হবে পি আর পদ্ধতি কি এবং এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।
পি আর পদ্ধতি কি?
পি আর পদ্ধতি (Proportional Representation - PR) হল একটি নির্বাচনী পদ্ধতি যেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদে সংসদ সদস্য (এম পি) পদ বা আসন লাভ করে, যা জনগণের প্রতিনিধিত্বের বৈচিত্র নিশ্চিত করে। এর ফলে একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব মূলক সংসদ গড়ে ওঠে। পি আর পদ্ধতির মাধ্যমে প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল গুলো জনগণের কাছে ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করে এবং তাদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। এটি শুধু নির্বাচনের সময় নয় বরং নির্বাচনের আগে পরে দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করা হয়। তবে নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে এই পদ্ধতির প্রয়োগে কিছু চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা রয়েছে, যা আমাদের বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন। বৈশিষ্ট্য গুলো সম্পর্কে জেনে নিই।
![]() |
পি-আর-পদ্ধতি। ছবি - এআই |
প্রতিনিধিত্বের বৈচিত্র:
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত হয়।
সংসদীয় স্থিতিশীলতা:
ছোট দলগুলোর সংসদে প্রতিনিধিত্ব বজায় থাকে।
ভোটের মূল্য বৃদ্ধি:
ভোটারের প্রতিটি ভোটের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়।
পি আর পদ্ধতির আসন বন্টন
নির্বাচনে বিশ্লেষকদের মতে, পি আর পদ্ধতি বা আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা গণতন্ত্রকে আরো বেশি শক্তিশালী করে এবং ভোটারদের নিজস্ব মতামত কে মূল্যায়ন করে। এই পদ্ধতি নির্বাচনী ব্যবস্থায় এমন একটি কৌশল যেখানে সংসদীয় আসন বন্টন হয় প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে। এখানে উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যদি কোন রাজনৈতিক দল মত প্রদত্ত ভোটের শতকরা ৩০ শতাংশ ভোট পায়, তবে সেই দল আনুপাতিক হারে সংসদের ৩০ শতাংশ বা ৩০ টি আসন পাবেন, তা সেই দল সরাসরি একটি আসনেও সরাসরি বিজয়ী হোক বা না হোক। সর্বপ্রথম ১৮৯৯ সালে বেলজিয়ামে পি আর (PR) পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিশ্বের ৯১ টি দেশে আনুপাতিক নির্বাচন (পি আর পদ্ধতি) ব্যবস্থা প্রচলিত।
আরো পড়ুন: আয়না ঘর কি - আয়না ঘর কোথায় অবস্থিত
অনেক নির্বাচন বিশ্লেষক মনে করেন, এই পদ্ধতিতে একটি নির্বাচনে দেওয়া প্রত্যেকটি ভোটারের ভোট কাজে লাগে এবং প্রতিটি ভোট সংসদে সমানভাবে প্রতিনিধিত্ব পায়। তাছাড়া একটি নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা এবং ভোটের হারের ভিত্তিতে সংসদে আসন বন্টন হয়ে থাকে। এর ফলে প্রত্যেক ভোটারের সমর্থিত ছোট দলগুলোও সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায় এবং জনগণের ভোটের প্রতিফলন সরাসরি সংসদে দেখা যায়। এখানে উল্লেখ্য ভোটার কোন প্রার্থীর নামে নয় বরং রাজনৈতিক দলের প্রতীককে ভোট প্রদান করে। প্রতিটি দলের মোট ভোট গণনা শেষে শতকরা হারে আসল বন্টন করা হয়। নিচের উদাহরণ দেখলে আপনি আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
বাস্তব উদাহরণ - পি আর পদ্ধতি
পি আর পদ্ধতিতে আসন ভাগাভাগির একটি বাস্তব উদাহরণ উল্লেখ করা হলো। উদাহরণস্বরূপ - যদি কোন পার্লামেন্টের সদস্য সংখ্যা ১০০ জন হয় এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪টি (A, B, C, D) হয় তবে নিচের শতাংশের উপর নির্ভর করে সংসদীয় আসন ভাগাভাগী হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী জনগণের প্রাপ্ত ভোটকে ১০০% ধরে হিসাব দেখানো হলো।
![]() |
পি-আর-পদ্ধতি-নির্বাচন। ছবি - এআই |
A দলের প্রাপ্ত ভোট = ৪০% ভোট = ৪০ আসন (এম পি)
B দলের প্রাপ্ত ভোট = ৩০% ভোট = ৩০ আসন (এম পি)
C দলের প্রাপ্ত ভোট = ২০% ভোট = ২০ আসন (এম পি)
D দলের প্রাপ্ত ভোট = ১০% ভোট = ১০ আসন (এম পি)
মোট প্রাপ্ত ভোট = ১০০% ভোট = ১০০ জন সংসদ সদস্য (এমপি)
পি আর পদ্ধতিতে কিভাবে সরকার গঠন হবে?
যে রাজনৈতিক দল ৫০%+ ভোট পাবে কেবলমাত্র তারাই এককভাবে সরকার গঠন করতে পারবে। তবে কোন দলেই যদি ৫০%+ ভোট না পায় তবে তারা অন্যান্য দলের সাথে সংযুক্ত হয়ে জোট সরকার (Coalition Government)গঠন করবে। উদাহরণস্বরূপ: উপরে A দল ৪০ টি আসন পেয়ে সরাসরি এককভাবে সরকার গঠন করতে পারবে না, তাই B দল ৩০ আসন (এম পি) অথবা C দলের ২০ আসন (এম পি) এর সাথে সংযুক্ত হয়ে জোট সরকার গঠন করতে হবে।
পি আর পদ্ধতি: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট
গতানুগতিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতির ফলে বাংলাদেশে নির্বাচিত একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার দল পরবর্তীতে স্বৈরাচারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। যা ২০২৪ সালের জুলাই মাসে জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধান সংস্কার কমিশন সংখ্যানুপাতিক পি আর পদ্ধতিতে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে। সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট সংসদ সদস্য সংখ্যা হবে ৫০০। যেখানে নিম্নকক্ষে আসন থাকবে ৪০০ (এর মধ্যে নারীদের জন্য ১০০ টি আসন সংরক্ষিত, তারাও সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন), যা নির্বাচিত হবেন বর্তমান পদ্ধতিতে। আর উচ্চকক্ষে আসন থাকবে ১০০ টি, যা নির্বাচিত হবেন পিআর পদ্ধতিতে।
আরো পড়ুন: স্টারলিংক বাংলাদেশ ২০২৫
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে আঞ্চলিকতা, ধর্মীয় মেরুকরণ এবং বিবিসি গোষ্ঠীর প্রভাব উত্থান ঘটতে পারে। কেননা বাংলাদেশের রাজনীতিতে দলীয় শৃঙ্খলা বোধ অত্যন্ত দুর্বল এবং নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন বিভাগ, বিচার বিভাগ সবকিছুতেই কাঠামোগত দুর্বলতায় জর্জরিত। এর ফলে পি আর ব্যবস্থায় নির্বাচন দেশে এক ধরনের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা এবং অস্থিরতা তৈরি হওয়ার খুবই আশঙ্কা রয়ে যায়। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের পরামর্শ - বাংলাদেশ বর্তমান পদ্ধতিতে সরাসরি ভোট এবং পি আর পদ্ধতিতে ভোট -এ দুটোর সংমিশ্রনেই রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য মতে একটা সহজ ব্যবস্থা করা যায়।
পি আর পদ্ধতির সুবিধা সমূহ
পি আর পদ্ধতিতে রাজনৈতিক দল গুলোর প্রাপ্ত ভোটের হার অনুযায়ী আসন বন্টন হয়, মাল্টি মেম্বার কনস্টিটুয়েন্সি বজায় থাকে, দল ভিত্তিক তালিকা ভোটার গণ বেছে নেন, ছোট ছোট দলগুলোও সংসদে প্রবেশের সুযোগ পান এবং ভোটার ও প্রার্থীর সরাসরি সম্পর্ক তুলনামূলক দুর্বল হয়। এই পদ্ধতির ফলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন এবং উগ্র জাতীয়তাবাদ বা চরমপন্থার উত্থান কার্যকর ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা সক্ষম হয়। এর ফলে গণতন্ত্রের ভিত আরো দৃঢ় এবং মজবুত হয়। তবে এই পদ্ধতিতে ভোট নষ্ট হয় না এবং ক্ষমতার একচ্ছত্র কেন্দ্রিকরণ কমে আসে। তাহলে চলুন পি আর পদ্ধতির সুবিধা সমূহ জেনে নিই।
- সংসদে ভোটের প্রতিফলন সুনিশ্চিত হয় এবং কোন ভোট নষ্ট হয় না।
- এই পদ্ধতিতে একক দলের মনোপলি হবে না।
- সংখ্যালঘু, ধর্মীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ বাড়ে।
- সরকারের একচ্ছত্র ক্ষমতার কেন্দ্রিকরণ কমে, আলোচনা এবং সমঝোতা ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা চালু হয়।
- নারী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি নির্বাচন করা সহজ হয়।
- বিভিন্ন রাজনৈতিক বৈচিত্র্য উঠে আসে এবং একক দৃষ্টিভঙ্গি চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ কমে।
- সর্বোপরি স্বৈরাচারী মনোভাব বিলুপ্ত হয়।
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের সুবিধা সমূহ বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন।
পি আর পদ্ধতির চ্যালেঞ্জ বা অসুবিধা
পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের সুবিধা এবং অসুবিধা বা চ্যালেঞ্জ দুটোই রয়েছে। এই পদ্ধতিতে দুর্বল ও জটিল জোট সরকার, জনতার সাথে নেতার সুসম্পর্ক থাকবে না এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে পারে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক পি আর পদ্ধতির চ্যালেঞ্জ বা অসুবিধা সমূহ সম্পর্কে।
- এই পদ্ধতিতে দুর্বল এবং জটিল জোট সরকার (কোয়ালিশন সরকার) গঠিত হয়, যা কার্যকারিতা কমার সম্ভাবনা থাকে।
- একক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না কিংবা কোন সিদ্ধান্তই হয় না।
- নেতা এবং জনতার সাথে সরাসরি সম্পর্ক থাকে না।
- যে কোন সিদ্ধান্ত দল থেকেই নেওয়া হয়।
- উগ্রবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ কিংবা সংকীর্ণ গোষ্ঠীও সংসদে বৈধতা পায়, যা রাষ্ট্রের ঐক্য প্রশ্নের মুখে পড়ে।
- জোট সরকার হওয়ার কারণে ঘন ঘন সরকার পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকে।
- রাজনৈতিক দলের প্রধান নেতার স্বজন প্রীতির মাধ্যমে সংসদীয় নেতা ঘোষণা করার সম্ভাবনা থাকে।
- নমিনেশন বাণিজ্য আরো প্রকট হতে পারে।
- দেশে যে কোন সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিশৃঙ্খলা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমরা পি আর পদ্ধতির চ্যালেঞ্জ বা অসুবিধা সমূহ বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি। আশা করি এ বিষয়ে আপনারা ভালোভাবে জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন।
পি আর পদ্ধতি কোন কোন দেশে চালু আছে?
উইকিপিডিয়ার মতে, বর্তমানে বিশ্বের ১৭০ টি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থার অর্ধেকের বেশি রাষ্ট্রে পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অন্য এক সূত্র মতে, বর্তমানে বিশ্বের ৯১ টি দেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়। নিচে কোন কোন দেশে এই পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তা উল্লেখ করা হলো।
এশিয়া মহাদেশ:
নেপাল, শ্রীলংকা (আংশিক), ইসরাইল, ইন্দোনেশিয়া ও জাপান (মিশ্র পি আর) ইত্যাদি।
ইউরোপ মহাদেশ:
বেলজিয়াম (সর্বপ্রথম), নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, ডেনমার্ক, সুইডেন, স্পেন, পর্তুগাল, গ্রিস, ইতালি ও জার্মানি (মিশ্র পি আর) ইত্যাদি।
আফ্রিকা মহাদেশ:
দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, লেসোথো ইত্যাদি।
দক্ষিণ আমেরিকা:
চিলি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ইত্যাদি দেশে পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের মতো দেশে সম্ভাব্য সমাধান
দুর্বল আইনশৃঙ্খলা, বিচার বিভাগের অস্থিতিশীলতা সম্পন্ন বাংলাদেশের মতো দেশে হঠাৎ করে পূর্ণাঙ্গ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু না করে ধাপে ধাপে কাঠামোগত প্রস্তুতির মাধ্যমে পদ্ধতিটি বাস্তবায়ন করা উচিত। এজন্য কয়েকটি বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
এদেশে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ ব্যবস্থা চালু রেখে নিম্নকক্ষে বর্তমানে বিদ্যমান জনগণের সরাসরি ভোটে বিজয়ী হওয়ার পদ্ধতি বজায় রাখা যেতে পারে, যাতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
অন্যদিকে উচ্চ কক্ষে পিয়ার পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে সকল শ্রেণী পেশা এবং গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা যেতে পারে। আর এক দশক পরে এই পদ্ধতির ফলাফল পর্যালোচনার মাধ্যমে পূর্ণ পি আর পদ্ধতিতে যাওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করা যেতে পারে।
আরো পড়ুন: সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ছবি ও দর্শনীয় স্থান
সর্বশেষ কথা - পি আর পদ্ধতি
পি আর পদ্ধতি বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে এর প্রয়োগে রাজনৈতিক দলগুলোর সহমত ও জনগণের সমর্থন একান্তই প্রয়োজন। এই পদ্ধতির সফল প্রয়োগে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আরো শক্তিশালী হবে এবং সংসদের ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় থাকবে। ফলে সংসদে বড় দল গুলোর পাশাপাশি ছোট ছোট দলগুলোও সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে। আগামীর বাংলাদেশ পি আর পদ্ধতিতে আরো এগিয়ে যাবে এবং শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সফল হবে - এই প্রত্যাশা রইল।
প্রিয় পাঠক আশা করি, পি আর পদ্ধতি শিরোনামের লেখাটি পড়ে আপনারা বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। লেখাটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকলে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো, যেন অন্যরাও উপকৃত হতে পারেন। কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন। আজকের লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url