ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি - আপডেট তথ্য
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি - আপডেট তথ্য।আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক আপনি কি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী ঋণ পদ্ধতি (Islami Bank Probashi Loan), প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম, ইসলামী ব্যাংক কি কি খাতে লোন দেয়, ব্যাংক লোন নিতে কি কি কাগজ লাগে ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আজকের 'ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি - আপডেট তথ্য' শিরোনামের লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।
![]() |
ইসলামী-ব্যাংক-প্রবাসী-লোন-পদ্ধতি |
আজকাল মানুষের বিভিন্ন কারণে ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। তবে কেউ যদি ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন নিতে চান তাহলে তাকে অবশ্যই ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত। তাই আজকের লেখায় আমরা ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দেবো।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি (Islami Bank Bangladesh PLC) বাংলাদেশের একটি ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক বাণিজ্যিক ব্যাংক। এ কারণেই এদেশের মানুষের কাছে আস্থার জায়গা তৈরি করে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে গেছে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের লোন বা ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্যও অভিবাসন ঋণ এবং অন্যান্য বিশেষ ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকে। তবে কেউ ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন পেতে চাইলে তাকে প্রথমে অবশ্যই বিদেশে কাজ করতে হবে এবং বিদেশে কাজ করার কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে কিংবা এখনো বিদেশে অবস্থান করছেন - এরকম প্রমাণ দিতে হবে।
আরো পড়ুন: ৫০ হাজার টাকা লোন চাই।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন যেকোনো নারী-পুরুষ নিতে পারেন। তবে প্রবাসী ব্যাংক লোন পেতে হলে প্রার্থীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে এবং বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। তাছাড়াও ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে এবং নিয়মিত লেনদেনের ডকুমেন্টস থাকতে হবে। তাহলে চলুন এখন আমরা ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করার নিয়ম
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন (Islami Bank Probashi Loan) পদ্ধতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকার কারণে আমরা অনেকেই এই প্রবাসী লোনের জন্য কিভাবে আবেদন করতে হয় তা জানি না। তাছাড়া ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার জন্য আপনার প্রবাসী ভিসা সঠিক কিনা, তা জানার জন্য ইসলামী ব্যাংকে নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে যখন বিদেশে যাওয়ার জন্য ভিসা দেওয়া হবে তখন সেই ভিসার ফটোকপি দিয়ে আপনি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তারপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার ভিসার মেয়াদ, চাকরির বেতন ইত্যাদি ডকুমেন্টস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আপনি প্রবাসী লোন পাওয়ার যোগ্য হলে তবেই আপনাকে ইসলামী ব্যাংক লোন দেওয়া হবে।
আরো পড়ুন: ১ লক্ষ টাকা লোন চাই।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার জন্য যা যা ডকুমেন্ট লাগবে
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন (Islami Bank Probashi Loan) পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রমাণাদি দাখিল করতে হবে। অন্যথায় আপনি প্রবাসী লোন বা ঋণের জন্য বিবেচিত হবেন না। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার ডকুমেন্টস সম্পর্কে বিস্তারিত।
১। জাতীয় পরিচয় পত্র (NID Card) এবং জন্ম নিবন্ধন সনদ ফটোকপি।
২। আবেদনকারীর পাসপোর্ট এবং ভিসার ফটোকপি।
৩। প্রার্থী প্রবাসের যে কোম্পানিতে কর্মরত আছেন ওই কোম্পানির নিয়োগপত্র এবং বেতনের রশিদ সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
৪। প্রার্থীর পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি সম্প্রতিক তোলা রঙিন ছবি।
৫। নমিনীর জাতীয় পরিচয় পত্র (NID Card) এবং জন্ম নিবন্ধন সনদ ফটোকপি।
![]() |
ইসলামী-ব্যাংক-প্রবাসী-লোন পদ্ধতি। ছবি - এআই |
৬। আর্থিকভাবে স্বচ্ছ ২ (দুই) জন গ্যারান্টারের সম্মতি পত্র।
৭। আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নিয়ে বিদেশ গমন করেন অথবা অনেক আগে থেকেই বিদেশে থাকেন - এই দুটি ক্ষেত্রেই আপনার পাসপোর্ট এবং ভিসা আপনার সাথে থাকতে হবে। কারণ এগুলো যে কোন সময় দেখানোর প্রয়োজন পড়তে পারে।
৮। আপনি যদি দেশের বাইরে থেকে ইসলামী ব্যাংকে প্রবাসী লোন নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনি বিদেশে যেই কোম্পানিতে চাকরি করছেন সেই কোম্পানির নিয়োগপত্র এবং মাসিক বেতনের রশিদ আপনাকে জমা দিতে হবে।
৭। আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নিয়ে বিদেশ গমন করেন অথবা অনেক আগে থেকেই বিদেশে থাকেন - এই দুটি ক্ষেত্রেই আপনার পাসপোর্ট এবং ভিসা আপনার সাথে থাকতে হবে। কারণ এগুলো যে কোন সময় দেখানোর প্রয়োজন পড়তে পারে।
৮। আপনি যদি দেশের বাইরে থেকে ইসলামী ব্যাংকে প্রবাসী লোন নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনি বিদেশে যেই কোম্পানিতে চাকরি করছেন সেই কোম্পানির নিয়োগপত্র এবং মাসিক বেতনের রশিদ আপনাকে জমা দিতে হবে।
৯। আপনি যদি নিজেই বিদেশে ব্যবসা করেন তাহলে সেই ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স ফটোকপি লাগবে।
১০। আপনি যেই কাজের জন্য প্রবাসী লোন বা ঋণ নেবেন তার পূর্ণ বিবরণী প্রদান করতে হতে পারে।
১১। আপনার TIN সার্টিফিকেটের ফটোকপি প্রয়োজন হতে পারে।
১২। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ইসলামী ব্যাংকে একটি সচল ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে।
১৩। আপনার ব্যাংকের লেনদেনের ৬ মাসের একটা স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে।
১৪। আপনাকে আপনার আয়ের প্রমাণপত্র স্বরূপ রেমিটেন্স সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।
১৫। ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন গ্রহণ করতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আপনার সর্বনিম্ন ৫ লক্ষ টাকার একটি এফডিআর থাকতে হবে অথবা ৫ লক্ষ টাকার স্থায়ী সম্পদ দেখাতে হবে অথবা আপনি যত টাকা প্রবাসী লোন নিতে চান ঠিক ততটুকু পরিমাণ এফডিআর বা স্থায়ী সম্পদ থাকতে হবে। নতুবা আপনি ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন নিতে পারবেন না।
আরো পড়ুন: প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন পদ্ধতি।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পাওয়ার জন্য আপনাকে সরাসরি ইসলামী ব্যাংকের যে কোন শাখায় গিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি কাগজপত্র এবং অন্যান্য ডকুমেন্টস সেগুলো সঠিকভাবে মিলিয়ে ইসলামী ব্যাংকের নির্ধারিত লোন বা ঋণ ফর্মে যথাযথভাবে পূরণ করে আবেদন করতে হবে। এরপর ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার সকল তথ্য প্রমাণাদি মিলিয়ে দেখার পর আপনি প্রবাসী লোন পাওয়ার যোগ্য হলে তবেই আপনাকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রবাসী লোন দেবেন। প্রয়োজনে আপনার যদি এই সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকে তাহলে আপনি ইসলামী ব্যাংকের নির্ধারিত হটলাইন নাম্বারে ফোন করে জেনে নিতে পারেন। ইসলামী ব্যাংকের হট লাইন নম্বর: 09611016259.
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্টস এবং প্রমাণাদি লাগবে তা বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করেছি। আশা করি, ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি (Islami Bank Probashi Loan) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন।
ইসলামী ব্যাংক কোন কোন খাতে লোন বা ঋণ প্রদান করে
ইসলামে ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতিতে এবার আমরা জানবো ইসলামী ব্যাংক মূলত কোন কোন খাতে লোন বা ঋণ দিয়ে থাকে। ইসলামী ব্যাংক ইতিমধ্যে সকল গ্রাহকের আস্থা অর্জন করেছে। এই ব্যাংকে জমাকৃত টাকা বিনিয়োগ করা হয় বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজে এবং সেই থেকে পরবর্তীতে সে মুনাফা ফেরত পাচ্ছে। যেহেতু এই ব্যাংকে লাভ এবং ক্ষতি দুটোই বিবেচিত হয়, তাই এখানে সুদ হিসেবে হারাম টাকা হওয়ার সম্ভাবনা নাই। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি নিম্নলিখিত সব কয়টি খাতে লোন বা ঋণ দিয়ে থাকে। আপনি ইচ্ছে করলে যে কোন একটি লোন পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন।
- প্রবাসী লোন।
- উদ্যোক্তা লোন।
- গাড়ির লোন।
- ট্রান্সপোর্ট লোন।
- রিয়েল স্টেট লোন।
- কৃষি খাতে লোন।
- হোম লোন বা হাউজ লোন।
- ডক্টর লোন।
- ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন।
- মহিলা উদ্যোক্তা লোন।
- ছোট্ট ব্যবসা লোন ।
ইসলামে ব্যাংক সম্পূর্ণ ইসলামী শরিয়া মোতাবেক উপরোক্ত বিভিন্ন খাতে লোন বা বিনিয়োগ করে থাকে। সেখান থেকে আপনি যেকোনো একটি লোন বেছে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক আপনাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। আশা করি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। এবার আমরা ইসলামে ব্যাংক প্রবাসী লোনের উদ্দেশ্য কি সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
আরো পড়ুন: ইসলামিক ব্যাংক একাউন্ট চেক করার উপায়।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী ঋণ পদ্ধতির উদ্দেশ্য কি
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি শিরোনামে এবার আমরা ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানব। প্রতিটি ব্যাংকই তার নিজস্ব সুযোগ-সুবিধার জন্য কিছু উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্যকে সামনে রেখে লোন প্রদান করে থাকে। ঠিক তেমনি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করারও কিছু মহৎ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে।
১। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর প্রধান উদ্দেশ্য হল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসীদের বৈদেশিক রেমিটেন্স প্রদানে উৎসাহিত করা এবং দেশের অর্থ পাচার রোধ করা।
২। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন শেষে সকল প্রবাসী ভাই-বোন এবং তাদের সন্তানদের জন্য কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা।
৩। যারা দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে অবস্থান করছেন তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন এবং আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে থাকে।
৪। বাংলাদেশীদের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে থাকে।
৫। দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে এবং কঠোর পরিশ্রম করে পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাসী উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে প্রবাসী লোন প্রদান করা হয়।
৬।কৃষক, মজুর থেকে শুরু করে উচ্চ শ্রেণীর মানুষদেরকে ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং উচ্চ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য ইসলামী ব্যাংক লোন প্রদান করে থাকে।
৭। বিদেশ থেকে প্রবাসী ভাইয়েরা ফিরে যাবে আত্মনির্ভরশীল হয়ে নিজেদের কর্মসংস্থান গড়ে তোলে জীবনমান উন্নত করতে পারে সেই সুযোগ প্রদান করার জন্য ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী ঋণ দিয়ে থাকে।
সম্মানিত পাঠক, ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী ঋণ পাওয়ার নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দিলাম। আপনি আপনার পছন্দমত যে কোন একটি পদ্ধতি অবলম্বন করে ঋণ নিয়ে নিজের জীবনমান এবং সামাজিক মান উন্নয়ন করতে পারেন এই প্রত্যাশা রইল। এবার আমরা ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন কত টাকা দেয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেব।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন কত টাকা দেয়
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতিতে এবার আমরা জানব ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন কত টাকা দেয়। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসীদের সাধারণত লোন হিসেবে বিবেচনা করেনা বরং তারা এটিকে হালাল উপায়ে ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগ হিসেবে দেখে। কাজের ধরন বা ভিসার মান অনুযায়ী ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিতে পারবেন। ইসলামী ব্যাংক সাধারণত সর্বনিম্ন ৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ মিলিয়ন টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে থাকে।
তবে এটাও ঠিক যে আপনি যত টাকা লোন চাইবেন আপনাকে ঠিক তত টাকাই ব্যাংক লোন দিবে এটা ভাবা উচিত নয়। কেননা ব্যাংক আপনাকে কত টাকা লোন দিবে সেটা নির্ভর করবে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, লেনদেন, এফডিআর এর পরিমাণ সহ আরো কিছু শর্তের ওপর।
আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসীদের সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করে থাকে। ইসলামী ব্যাংকের যারা নিয়মিত গ্রাহক রয়েছেন তারা বিদেশ গমনের সময় ইসলামী ব্যাংক থেকে এই ইনভেস্টমেন্ট নিতে পারবেন। সুতরাং ইসলামী ব্যাংক থেকে আপনি কত টাকা প্রবাসী লোন পেতে পারেন তা ভালো হবে জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন।
ইসলামিক ব্যাংক প্রবাসী লোনের ইন্টারেস্ট (সুদ) হার
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতিতে এবার আমরা আপনাদের মুনাফা হার জানিয়ে দেব। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে ৭.৫% ইন্টারেস্ট নিয়ে থাকে অর্থাৎ ৭.৫% মুনাফা ইসলামী ব্যাংক এই লোনের বিপরীতে নিয়ে থাকে। এখানে আপনি প্রবাসী লোন যত টাকাই নেন না কেন, আপনার টাকার পরিমান অনুযায়ী ৭.৫% ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হবে।
ইসলামী ব্যাংকের অন্যান্য লোনের ইন্টারেস্ট হার
ইসলামী ব্যাংকের ঋণের মুনাফার হার বা ইন্টারেস্টের রেট বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন আপনি যদি ব্যক্তিগত লোন কিম্বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ঋণ নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে একরকম ইন্টারেস্ট রেট আবার আপনি কি পরিমান ঋণ নিচ্ছেন সেই ঋণের পরিমাণের ওপরও ইন্টারেস্ট রেট ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত ইসলামী ব্যাংকের লোনের ইন্টারেস্ট রেট ব্যবসায়িক লোনের ক্ষেত্রে প্রায় ১২% থেকে ২৫% হতে পারে এবং ব্যক্তিগত লোনের ক্ষেত্রে ইন্টারেস্ট রেট ১০% থেকে ২০% হতে পারে।
আবার আপনি যদি বাড়ি নির্মাণের জন্য হোম লোন নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ইন্টারেস্ট রেট বা মুনাফার হার হবে ১৬%। তবে এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো যে, ইসলামী ব্যাংক হোম লোনের জন্য জেলা শহর বা অন্যান্য অঞ্চলের জন্য দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকে এবং মহানগর শহরের জন্য সাধারণত ২৫ কোটি টাকা দিয়ে থাকে। এখন আপনি আপনার প্রয়োজন ও সামর্থন অনুযায়ী উক্ত অঞ্চলের জন্য ইসলামী ব্যাংকের লোন পদ্ধতি নির্বাচন করবেন এবং অবশ্যই ব্যাংকের সকল নির্দিষ্ট শর্তাদি পূরণ সাপেক্ষে।
সুতরাং ইসলামী ব্যাংকের আপনি যেই লোন নিবেন সেই লোনের বিশেষ কোনো শর্তাবলী আছে কিনা, লোন পরিশোধের সময়সীমা, লোনের ইন্টারেস্ট রেট বা মুনাফার হার সহ বিভিন্ন শর্ত জেনে নিবেন। এখানে উল্লেখ্য যে, যেকোনো ব্যাংকের মুনাফার হার বা ইন্টারেস্ট হার কম বেশি বা পরিবর্তন হতে পারে। তাই আপনি আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো শাখা থেকে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের মেয়াদ
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতিতে আপনি ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন নিতে পারবেন ১ বছর থেকে ১০ বছরের জন্য। আপনি কত টাকা লোন বা রেন নেবেন সেটার ওপর নির্ভর করে আপনার কিস্তি এবং আপনার কিস্তির বছর সহ বিস্তারিত ব্যাংক থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে। ইসলামী ব্যাংকের লোনের সময়কাল সাধারণত তিনটি মেয়াদে নির্ধারণ করে থাকে। যেমন স্বল্প মেয়াদী লোন, মাধ্যম মেয়াদী লোন এবং দীর্ঘমেয়াদি লোন।
তবে সহজ ভাষায় বলতে গেলে ইসলামী ব্যাংক আপনার ওপর যত টাকা ইনভেস্ট করবে কিংবা আপনাকে যত টাকা লোন দিবে তার পরিমাণ যদি কম হয় তাহলে আপনাকে ঋণের সময় কাল কম হবে। আবার যদি আপনার লোনের পরিমাণ বেশি হয় তবে সে ক্ষেত্রে আপনার এ ঋণের সময়সীমা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। তবে স্বাভাবিকভাবে ইসলামী ব্যাংকের লোনের সময়সীমা সম্পর্কে বিস্তারিত আপনার লোন নেওয়ার সময় জানিয়ে দিবে। সে ক্ষেত্রে আপনি লোনের মেয়াদ, ইনট্রারেস্ট বা মুনাফার হার ইত্যাদি সম্পর্কে জেনে তারপরে আপনি লোন নেওয়ার জন্য আগ্রহী হবেন। আশা করি, ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী ঋণ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন।
ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতির সুবিধা সমূহ
ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতিতে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি রয়েছে। কেননা ইসলামী ব্যাংক সম্পূর্ণ ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক লেনদেন করে থাকে। চলুন তাহলে জেনে নেব চাপ ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতির সুবিধা সম্পর্কে।
১। ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতির সম্পূর্ণ ইসলামী নীতিমালা অনুসরণ করে থাকে যার ফলে গ্রাহকগণ ধর্মীয়ভাবে মানসিক শান্তি পান এবং তারা অনুধাবন করেন যে তাদের বিনিয়োগ এবং ঋণ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং হালাল।
২। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি মুদারাবাহ্ এবং মুরাবাহাহ্ পদ্ধতিতে লোন প্রদান করে সাধারণত সম্পদের মাধ্যমে যার ফলে গ্রাহকগণ তাদের অর্থ ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসায়িক সম্পদ হালাল উপায়ে উন্নত করতে পারে। যা একেবারেই ইসলামে শরীয়ত মোতাবেক হয়ে থাকে।
৩। প্রবাসী লোন পদ্ধতির আরেকটি উপকারিতা বা সুবিধা হলো হলো গ্রাহকদের ধার্মিক বিশেষত্ব রক্ষা করা এবং হালাল উপায়ে অর্থ লোনের বিনিময়ে সুন্দর আর্থিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
৪। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী ঋণ পদ্ধতিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লাভ এবং ক্ষতি দুটোই স্বীকার করে। যার কারণে এখানে বিনিয়োগ এবং ঋণ নেওয়া দুটোই হালাল পর্যায়ে পড়ে। তাছাড়া এই ব্যাংক ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী স্বল্প সুদে গ্রাহকদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত কল্পে ব্যবস্থাপনা প্রদান করে যাতে ঋণকে বিনিয়োগ হিসেবে ধরা হয়।
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতির সুযোগ সুবিধা সমূহ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আশা করি, ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতির কিছু সতর্কতা
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি সম্পূর্ণ ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক একটি ধর্মীয় ব্যাংক ব্যবস্থাপনা। যেহেতু ইসলামে সুদকে হারাম এবং ব্যবসাকে হালাল করেছে, সেহেতু ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি সর্বদা হালাল-হারাম মেনে ইসলামী শরীয়তের মান অনুসরণ করেই যেকোনো আর্থিক বিনিয়োগ করে থাকে। এ কারণে মুসলিম সহ সকল সম্প্রদায়ের কাছে এই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা গ্রাহকদের স্বস্তি এবং স্বচ্ছতা অর্জন করেছে। যার জন্য এই ব্যাংকের সুখ্যাতি-সুনাম এবং জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর প্রবাসী লোন নেওয়ার ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে লোনের পরিমাণ, ইন্টারেস্টের হার, লোনের মেয়াদ এবং বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় জেনে নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কোন ঝামেলায় পড়তে না হয়। এভাবে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন সম্পর্কে সতর্ক এবং সজাগ থাকতে হবে।
আরো পড়ুন: আশা এনজিও লোন পদ্ধতি-আপডেট।
সর্বশেষ কথা -ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতিতে আমরা বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি সম্পূর্ণ ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক লেনদেন এবং বিনিয়োগ করে থাকে। এই ব্যাংক দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটি। ইসলামিক ব্যাংকের ব্যাংকিং সিস্টেমে আপনি দেশে থাকার পাশাপাশি বিদেশ থেকেও প্রবাসী লোন নিতে পারবেন। কেননা দারিদ্র বিমোচন এবং প্রবাসীদের অর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও কল্যাণে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী ঋণ পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে।
প্রিয় পাঠক, আশা করি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী ঋণ পদ্ধতি সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। লেখাটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকলে শেয়ার করার অনুরোধ রইল যেন আপনার বন্ধুবান্ধবও উপকৃত হতে পারেন। প্রবাসী লোন পদ্ধতি লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url