আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম কী?
আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম কী?আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা যারা আজকে জানতে চেয়েছেন আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। আমলকি এক প্রকার ভেষজ ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা অন্যান্য ফলের তুলনায় অনেক বেশি। সেজন্য আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খিওয়ার নিয়ম। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে নিম্নে জেনে নেওয়া যাক আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম।
![]() |
| আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম |
মহান আল্লাহতালা মানব জাতির কল্যাণে দুনিয়ায় অগণিত জিনিস সৃষ্টি করেছেন। এরকম কোটি কোটি সৃষ্টির মধ্যে মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী ও ঔষধি গুণে ভরপুর একটি ফলের নাম হল আমলকি। দেশীয় ফল হিসেবে আমলকি (Amloki) সবার কাছে পরিচিত। এটি দামে যেমন সস্তা ও সহজলভ্য তেমনি রয়েছে নানাবিধ উপকারিতা। জেনে নেওয়া যাক আমলকি খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা এবং আমলকির পুষ্টি ও ঔষধি গুনাগুন।
আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম
আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম জানেন কি? জানুন আমলকির পুষ্টিগুণ, ঔষধি গুণাগুণ, চিকিৎসা, ক্ষতিকর দিক এবং খাওয়ার নিয়ম - এ টু জেড। আমলকি প্রায় বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই দেখা যায়। আমলকি ফল হালকা সবুজ বা হলুদ ও গোলাকৃতি ব্যাস এক থেকে দুই ইঞ্চির কম-বেশি হয়। কাঠের রং লাল বা বাদামি লাল। আমলকি গাছ ৪ থেকে পাঁচ বছর বয়সে ফল দেয়। আমলকির ফল আগস্ট নভেম্বর পর্যন্ত পাওয়া যায় এবং বীজ দিয়ে আমলকির বংশবিস্তার হয় বর্ষাকালে আমলকির চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়।
আমলকি গাছ ৮ থেকে ১৮ মিটার পর্যন্ত বিশিষ্ট হতে পারে পাতা ঝরা প্রকৃতির। হালকা সবুজ পাতা, যৌগিক পত্রের পতক, ছোট ১ থেকে ২ ইঞ্চি লম্বা হয়। হালকা সবুজ স্ত্রী ফুল ও পুরুষ ফুল একই গাছে ধরে। ফলগুলো সাধারণত মসৃণ বা তেলতেলে হয়ে থাকে। এর স্বাদ সাধারণত টক। চলুন নিম্নে জেনে নেই আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
আমলকির বৈজ্ঞানিক নাম
ফাইলান্থাসি পরিবারের ফাইলানথুস গণের এক প্রকার ভেষজ ফল। সংস্কৃত ভাষায় এর নাম 'আমলক'। ইংরেজি নাম Amla বা Amloki. এরা রোমশ বিহীন বা রোমোশ পর্ণমোচী বৃক্ষ। ভেষজ গুনে ভরপুর একটি প্রাকৃতিক উপাদান আমলকি। এটি মানুষের শরীরের জন্য অনেক ধরনের উপকার করে। এই ফলটিকে 'মাদার অফ ফ্রুট' বা 'ফলের জননী' বলা হয়। আমলকির উপকারিতা গুণ অনেক যা বলে শেষ করা যাবে না। তাহলে চলুন আমলকি খাওয়ার উপকারিতা গুলো বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
আয়ুর্বেদে আমলকিতে উপকারী ফল বলা হয়। আমলকিতে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। ঠান্ডা, কফ ছাড়াও আমলকি শরীরের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে দেয় না। আমলকিতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে কাজ করে। এর ফলে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে সরাসরি বাধা দেয়।
- আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। তাই আমলকি ইমরন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- দীর্ঘদিনের সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর ইত্যাদির সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে আমলকি।
- যক্ষা রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে আমলকি।
- যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে এই আমলকি।
- আমলকিতে বিদ্যমান পলিফেনল ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
- আমলকি নিয়মিত খেলে লিভারের কর্ম ক্ষমতা বাড়ে। এর ফলে বদহজম ও পেটের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে আমলকি।
- আমলকির ফাইবার শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট দূর করতে সহায়ক।
- আমলকিতে থাকা ক্রোমিয়াম শরীরের ইনসুলিন উৎপাদনে সহায়তা করে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- মুখের আলসার বা দাঁতের ক্ষত রোগ সারাতেও আমলকির জুড়ি নেই।
- আমলকিতে অ্যান্টি এজিং উপাদান থাকায় বয়স ধরে রাখতে সহায়তা করে।
- আমলকির রস মাথার স্ক্যাল্পে লাগালে মাথায় রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- বয়স্কদের জন্য আমলকি খুবই উপকারী একটি ফল। এতে থাকা ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সক্ষম।
- আমলকি চোখে ছানি পড়া, চোখে কম দেখা এবং চোখের বিভিন্ন সমস্যা থেকে।
- আমলকি নিয়মিত সকালে খেলে আপনি সারা বছর সুস্থ থাকবেন।5
- আমলকি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি উপকারী ফল। প্রতিদিন মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
- আমলকির রস হার্টের জন্য ভালো। হার্টকে সুস্থ রেখে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে হার্ট কে শক্তিশালী করে তোলে আমলকি।
- আমলকির রস কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাইলসের সমস্যা দূর করতে সক্ষম।
- আমলকি আমাদের পাচনতন্ত্র সক্রিয় রাখে এবং কিডনিকে সুস্থ রাখে।
- আমলকিতে বিদ্যমান কিছু ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ মহিলাদের মাসিক ঋতুচক্রের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপকারী।
আমলকি খাওয়ার অপকারিতাঃ
আমলকিতে উপস্থিত ভিটামিন সি এর আধ্যক্ষ হাইপার এসিডিটির সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। আমলকির কিছু উপাদান রক্তচাপকে প্রভাবিত করে। উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের আমলকি খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। এটি খেলে শরীরের সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায় যার কারণে কিডনি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না।
আমলকির পুষ্টিগুণঃ
আমলকির অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে. এই গাছের ফল ও পাতা দুটোই ঔষধ রূপে ব্যবহার করা যায়। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে যা পেয়ারার চেয়ে তিনগুণ ও কাগজি লেবুর চেয়ে ১০ গুণ কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুন আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ আমের চেয়ে ২৪ গুন এবং কলার যে ৬০গুণ বেশি।
একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি দরকার। কেউ যদি দিনে দুটো আমলকি খায় তাহলে সে ওই পরিমাণ ভিটামিন সি পেতে পারে। আমলকি খেলে মুখে রুচিও বাড়ে।
আমলকির ঔষধি গুনাগুন ও খাওয়ার নিয়ম
আমলকির নানারকম ওষুধি গুণাণ রয়েছে। আমাদের আর্টিকেলের আজকের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো আমলকির ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক আমলকির ঔষধি গুনাগুন ও খাওয়ার নিয়ম -
আলসার চিকিৎসায়ঃ
গ্যাস্ট্রিক বা আলসার নামটির সাথে পরিচিত নন এমন লোক খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। গ্যাস্ট্রিক বা আলসার বলতে যা বুঝিয়ে থাকেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে বলে। আপনি যদি নিয়মিত আমলকি খেতে পারেন তবে পেটের এই আলসার দূর হয়ে যাবে।
ক্ষুধা মন্দা দূর করতেঃ
আপনি কি খোদা বান্দা দূর করতে চান তবে আপনি প্রতিদিন খাবার আগে মাখন ও মধুর সঙ্গে খেতে পারেন এতে করে আপনি অনেকটাই উপকার পাবেন।
গলা ব্যথা এবং ঠান্ডা দূর করতেঃ
আপনি কি গলা ব্যথা এবং ঠাণ্ডা সমস্যায় ভুগছেন তবে আমলকির গুলোর সাথে মধু মিশিয়ে দিনে তিন চারবার খেতে পারেন এতে করে আপনার দীর্ঘমেয়াদি কাশি সর্দি সারিয়ে তুলবে।
রক্তের সুগার কমাতেঃ
শরীরের রক্তের সুগার কমাতে চাইলে নিয়মিত আমলকি খেতে পারেন নিয়মিত আমলকি খেলে শরীরে ইনসুলিন চুষে নিতে সাহায্য করে যা ডায়াবেটিস কমাতেও সাহায্য করে এবং রক্তের সুগার কমাতে বেশ কার্যকরী এই আমলকি।
আরো পড়ুন: ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি -খাদ্য তালিকা
দেহের চর্বি কমাতেঃ
আপনি যদি অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান তবে আমলকির সাহায্য নিতে পারেন। এটি নিয়মিত খেলে শরীরে প্রোটিনের স্তর বৃদ্ধি করে যা দেহের চর্বি কাটাতে সাহায্য করে। এটি খেলে হজম শক্তি বেড়ে যায় ফলে মানুষ মোটিয়ে যায় না তাই ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিন আমলকি খেতে পারেন।
রক্ত পরিষ্কার করতেঃ
এক গবেষণায় দেখা গেছে যে আমলকিতে পলিফেনল রয়েছে যা রক্তে অক্সিডেন্টিভ শর্করা থেকে শরীর রক্ষা করে। এবং আমলকি শরীরের ইনসুলিন চুষে নিতে সাহায্য করে যা আপনার শরীরের ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করবে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখবে।
চুলের যত্নেঃ
চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য এটি একটি অপরিহার্য উপাদান। আমলকি চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে। চুলকে খুশি কিমুক্ত ও কম বয়সে চুল পাকা রোদে আমলকি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে মধুর সঙ্গে আমলকির রস মিশিয়ে খেতে পারেন তবে চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
তাছাড়া এটি যদি নিয়মিত খাওয়া যায় তবে ত্বকের উজ্জলতাও বৃদ্ধির পেতে পারে এবং মুখের চামড়ায় কোন দাগ পরে না। আমলকি খেলে শুধু চুলের গোড়ায় শক্ত হয় না বরং চুল দ্রুত বেড়ে ওঠে।
হাড় মজবুত করতেঃ
আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। যা হার মজবুত করতে সাহায্য করে। আপনি যদি আপনার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন আমলকি রাখতে পারেন তবে আপনার হাড় আরো মজবুত হবে এবং হাড়ের ক্ষয় রোদ দূর হবে।
হৃদ রোগের ঝুকি কমায়ঃ
নিয়মিত আমলকি খাওয়া শুরু করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। উচ্চ কোলেস্টেরল এর মাত্রা হৃদরোগের ঝুঁকিতে অনেক বৃদ্ধি করে দেয়। সেজন্য আপনি যদি নিয়মিত আমলকি খান তবে খারাপ কোলেস্টেরল জোর করে ধমনীর ব্লক খুলে দিতে সাহায্য করবে আমলকি।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতেঃ
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে আমলকি কারণ আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। এছাড়া চোখ লাল হওয়া চুলকানো ও চোখ দিয়ে পানি পড়া রোধেও একটি বিশেষ ভূমিকা রাখে। আপনি যদি নিয়মিত আমলকির রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন তবে চোখের জ্যোতি আরো বৃদ্ধি হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের চিকিৎসায়ঃ
আমলকিতে সলিউবল ফাইবার থাকে। যা শরীর থেকে টক্সিন উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে এবং হজমে সাহায়তা করে। আমলকির রস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পাইলস রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
আমলকির খাওয়ার নিয়ম:
আমলকি নানাভাবে খাওয়া যায়। চলুন নিম্নে আমলকি খাওয়ার নিয়ম গুলো আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই পর্বে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে নেই-
- যাদের ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে তারা নিয়ম করে শীতকালের সকালে আমলকির রস খেতে পারেন।
- আমলকি সেদ্ধ করে গরম ভাতের সঙ্গেও খাওয়া যায়। এর ফলে সর্দি কাশি এবং অন্যান্য সমস্যা দূর হয়।
- শীতকালে অনেক সময় আমাদের জল কম খাওয়া হয়। এ জলের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আপনি আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আমলকি রাখুন এতে করে আপনার জলের ঘাটতি পূরণ হবে। এবং জল কম খাওয়ার ফলে বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আম লোকের রস বদ হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- লিভারের সমস্যা দূর করে আমলকি। সেইসঙ্গে ভালো রাখে আপনার হৃদ্য যন্ত্র তাই শীতের মৌসুমে রোজ একটা আমলকি খেতে পারেন।
- যারা শারীরিকভাবে একটু দুর্বল তারা শীতের মৌসুমে বেশি ভোগেন সর্দি কাশি এবং ঠান্ডা লেগে যাওয়া এই রোগে।তবে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সুদূর করতে সাহায্য করবে এই আমলকির রস।
- আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। তাই সর্দি কাশির সমস্যায় এই ফল দারুণভাবে কাজে লাগে আমলকি সেদ্ধ বা আমলকির রস খেতে পারেন প্রতিদিন।
- শুধু স্বাস্থ্যের যত্নে নয় চুলের সমস্যা সমাধানেও দারুন সাহায্য করে আমলকি। শীতকালে চুলের রুক্ষ শুষ্ক ভাব দূর করতে এবং নতুন চুল গজাতে এবং চুলকে খুশকি মুক্ত রাখতে সাহায্য করে আমলকি।
- আপনি যদি কিডনি সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে আপনি নিয়মিত আমলকির রস খেতে পারেন এতে করে আপনি কিডনি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
- আমলকির রস দৃষ্টি শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়া আপনি যদি নিয়মিত আমলকির রস খেতে পারেন তবে আপনার চোখের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন ।যেমন চোখের প্রদাহ চোখ চুলকানি বা চোখের জল পড়া সমস্যা।
আমলকির ক্ষতিকর দিকঃ
কোন কিছু মাত্রা অতিরিক্ত খেলে ক্ষতিকারক হতে পারে এবং আমলকির ক্ষেত্রেও তাই সেজন্য এটি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তবে সঠিক পরিমাণ এবং সম্ভব হলে ডাক্তার বা ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ ছাড়াও অতিরিক্ত খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন। আমাদের আর্টিকেলের আজকের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো আমলকির ক্ষতিকর দিক-
লিভারের ক্ষতি করতে পারেঃ
আপনি যদি আমলকি এবং আদা একসঙ্গে খান তবে এটি আপনার লিভারের খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।বেশি করে আমলকি খাওয়া আপনার লিভার এর ( SGPT) পরিমাণ বাড়ায়। যার কারনে আপনার হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে ।
কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারেঃ
আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা অতিরিক্ত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। বেশি করে আমলকি খাওয়ার কারণে মল শক্ত হয়ে যায় আপনি যদি প্রতিদিন আমলকি খান তাহলে আপনার বেশি করে জল পান করা উচিত। যাতে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যা না হয় আপনার শরীরে।
এসিডিটি বাড়ায়ঃ
আমলকি প্রাকৃতিকভাবে এসিডিটি এবং এটি খেলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে।বিশেষ করে খালি পেটে একটি খেলে আপনার অ্যাসিডিটির সমস্যা হবে। আপনি যদি মাত্রা অতিরিক্ত আমলকি প্রতিদিন খেতে থাকেন তবে আপনার প্রস্রাবে জ্বালাপোড়াও হতে পারে।
আরো পড়ুন: গ্যাস্ট্রিক কেন হয় - এর কারণ ও প্রতিকার
রক্তচাপকে প্রভাবিত করেঃ
উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তির আমলকি খাওয়া উচিত নয়।এর ফলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায় যার কারণে কিডনি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। যার কারণে শরীরে জল জমা হতে শুরু করে এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা শুরু হয়.
কেন আমলকি খাবেনঃ
টক-মিষ্টি ফল হচ্ছে আমলকি। ত্বকের ডিটক্স ও রক্ত পরিশুদ্ধ করতে আমলকির জুড়ি নেই নিয়মিত আমলকির রস খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ও আমলকিতে থাকা অ্যামিনো এসিড এবং এন্ড্রক্সিডেন্ট হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া ডায়াবেটিস, হাঁপানি কমাতে বেশ উপকারী এই আমলকি।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা আমলকি খেতে পছন্দ করেন আবার কেউ তো খেতে চান না। আমলকি খেলে আপনার শরীরে নানা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বক এবং চুলের জন্য আমলকির গুরুত্ব অপরিসীম সেজন্য আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত আমলকি রাখতে পারেন।
সর্বশেষ কথা - আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা যারা এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থেকে আমাদের আর্টিকেলটি পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন আমলকি খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা এবং আমলকির পুষ্টি ও ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ লেবু খাওয়ার উপকারিতা
দেশীয় ফল হিসেবে আমলকি সবার কাছে পরিচিত কারণ এটি দামে যেমন সস্তা ও সহজলভ্য তেমনি রয়েছে নানাবিদ উপকারিতা। ত্বক চুল ও চোখের যত্ন থেকে ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধেও ক্ষুদ্র আকৃতির এই ফল রাখতে পারে বিরাট ভূমিকা। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক থেকে দুইটি আমলকি খাওয়া যায়। তবে দিনে দু-একটির বেশি আমলকি খাওয়া ঠিক নয় কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে।
আমাদের আজকের আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম শিরোনামের পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে দিন। এবং নতুন নতুন তথ্য পেতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে এতক্ষণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।



এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url