শবে কদর নামাজের নিয়ম ও দোয়া জেনে নিন
শবে কদর নামাজের নিয়ম ও দোয়া জেনে নিন। পবিত্র রমজান মাস হল সিয়াম সাধনা ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট্য লাভের মাস। এই মাসেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ তাকওয়া অর্জন করে থাকেন। মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাজিলের মাস রমজানের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায় মহিমান্বিত শবে কদরের কারণে।
![]()  | 
| শবে-কদর-নামাজের-নিয়ম-ও-দোয়া। ছবি-এআই | 
শবে কদর রাতেই মহান আল্লাহ তায়ালা হযরত জিব্রাইল আঃ এর মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর ওপর সম্পূর্ণ কোরআন মাজীদ নাযিল করেছেন। ফারসি শব্দ 'শবে কদর' এর অর্থ 'সম্মানিত রজনী'। আর কোরআনের ভাষা আরবিতে এই রাতকে 'লাইলাতুল কদর' অর্থ 'সম্মানিত রজনী'ও বলে। চলুন শবে কদর নামাজের নিয়ম ও দোয়া সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জেনে নিই।
শবে কদর নামাজের নিয়ম ও দোয়া
পবিত্র রমজান মাস অত্যন্ত বরকতময় এবং ফজিলতপূর্ণ মাস। এই পবিত্র রমজান মাসের একটি রাতকে মহান আল্লাহ তা'আলা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ করেছেন। এই রাতকে আমরা 'শবে কদর' বা 'লাইলাতুল কদর' রাত বলে জানি। মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাজিলের এই শবে কদরের রাতে সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে কাটিয়ে থাকেন। কিন্তু অনেকেই শবে কদর নামাজের নিয়ত, শবে কদর নামাজের নিয়ম ও দোয়া কিভাবে পড়তে হয়, কোন কোন দোয়া পড়তে হয় এবং এ রাতের ফজিলত গুলো সম্পর্কে জানিনা।
শবে কদর নামাজের নিয়ত
আরবি শব্দ 'নিয়ত' এর অর্থ হল মনের ইচ্ছা, সংকল্প বা প্রতীক প্রতিজ্ঞা। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কোন কাজের শুরুতে মনের মধ্যে যে ইচ্ছে পোষণ করা হয়, মূলত সেটাকেই নিয়ত বলা হয়। কিন্তু ইসলামে নিয়ত খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কেননা সকল কিছুই নিয়তের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। অনেকেই শবে কদর নামাজের নিয়ত বাংলায় করে থাকেন। যেমন- 'হে আল্লাহ! আমি কেবলামুখী হয়ে আপনার সন্তুষ্টির জন্য দুই রাকাত শবে কদরের নফল নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত করছি, আল্লাহু আকবার'। এইভাবে শবে কদর নামাজের নিয়ত করলেও নামাজ শুদ্ধ হয়ে যাবে।
আবার কেউ কেউ আরবিতে নিয়ত করে থাকেন।
শবে কদর নামাজের নিয়ত আরবি উচ্চারণ:

শবে কদর নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণ:
'নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা'য়ালা রাকা'তাই সালাতিল লাইলাতিল কদরি নফলে মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারিফাতি - আল্লাহু আকবার'।
শবে কদর নামাজের নিয়ত বাংলা অর্থ:
'হে আল্লাহ! আমি কিবলামুখী হয়ে শবে কদরের (লাইলাতুল কদর) দুই রাকাত নফল নামাজ আদায়ের নিয়ত করলাম - আল্লাহু আকবার'।
শবে কদর নামাজের নিয়ম
শবে কদর নামাজ মূলত নফল নামাজ। রমজান মাসের শেষ দশকে শবে কদর রাতে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ, দুই রাকাত সুন্নত এবং তারাবির নামাজ শেষ করে বিতর নামাজের পূর্বে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত শবে কদরের নফল নামাজ পড়তে হয়। শবে কদর রাতে মাগরিব, এশা ও ফজর নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা উচিত। তাহলে রাসূলুল্লাহর সাঃ এর হাদিস অনুযায়ী শবে কদরের ফজিলত লাভ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। এক হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,
 'যে ব্যক্তি এশা ও ফজর নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়ে, সে যেন সারারাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে'। (মুসলিম, হাদিস নং ৬৫৬)
![]()  | 
| শবে-কদর-নামাজের-নিয়ম-ও-দোয়া। ছবি-এআই | 
শবে কদর রাতে নফল নামাজ পড়ার আলাদা কোন নিয়ত বা নিয়ম নেই। অন্যান্য নফল নামাজ যেভাবে পড়া হয়, শবে কদর রাতেও সেভাবে স্বাভাবিক নিয়মে নফল নামাজ পড়তে হবে। শবে কদর নফল নামাজে প্রথমে সানা, তারপর সূরা ফাতিহা, অন্যান্য সূরা মিলানো যেমন সূরা ইখলাস, সূরা কদর, সূরা তাকাসুর বা আয়াতুল কুরসি পড়ার পর বৈঠক, তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা শেষ করে স্বাভাবিক নিয়মে সালাম ফিরে নামাজ শেষ করতে হবে। এই নিয়মে যে কেউ দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়তে পারেন, চাইলে একসঙ্গে চার রাকাত করে নফল নামাজ পড়া যেতে পারে। 
এইভাবে যত রাকাত ইচ্ছে নফল নামাজ পড়তে পারেন। তবে কোন কোন ইসলাম বিশারদ মনে করেন, কমপক্ষে ১২ রাকাত শবে কদর বা লাইলাতুল কদর নামাজ আদায় করা উত্তম। অবশ্য এর বেশি যত রাকাত আদায় করা যায় ততই ভালো। মাঝরাত হতে শেষ রাত পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যেতে পারে। কারণ তাহাজ্জুদ নামাজ মহান আল্লাহর নিকট্য হাসিলের অন্যতম মাধ্যম। তাই ইসলামে এই নামাজের গুরুত্ব ও মর্যাদা অনেক বেশি। সুতরাং শবে কদর নামাজের পাশাপাশি রাতের শেষ ভাগে কমপক্ষে ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার অবশ্যই চেষ্টা করবেন।
তবে এই নামাজে কোন রাকাতে নির্দিষ্ট করে কোন সূরা বা আয়াত পড়া বাধ্যতামূলক নয়। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাঃ শবে কদর নামাজ বা লাইলাতুল কদর নামাজ পড়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম বর্ণনা করেননি। তাই এই রাতে কেউ নফল নামাজ পড়ার আলাদা কোন নিয়ম সাবস্ত্য করলে তা বিদ'আত বলে গণ্য হবে।
আর রাসূলুল্লাহ সাঃ বর্ণনা করেননি এবং সাহাবীগণ পালন করেননি, এমন কোন বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কোন ইবাদত বা আমল করলে তা বিদ'আতের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহর রাসূল সাঃ বিদ'আত আবিষ্কারকদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,
'নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব আর সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদ সাঃ এর আদর্শ। সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হলো, (দ্বীনের মধ্যে) নব-উদ্ভাবিত বিষয়। (দ্বীনের মধ্যে) নব-উদ্ভাবিত সবকিছুই বিদ'আত। প্রত্যেক বিদা'আত ভ্রষ্টতা, আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম'। (মুসলিম, হাদিস নং ১৫৩৫; নাসায়ি, হাদিস নং ১৫৬০)
শবে কদর নামাজের দোয়া
শবে কদর নামাজের নিয়ম ও দোয়া শিরোনামে এবার আমরা শবে কদর নামাজের দোয়া গুলো সম্পর্কে জেনে নেব। পবিত্র রমজান মাসের শবে কদর রাতে একজন মুসলিম ফরজ ও সুন্নত নামাজ ব্যতীত যে সকল ইবাদত করবেন তার পুরোটাই হবে নফল ইবাদত। মহিমান্বিত এই রাতে ধর্ম প্রাণ মুসলমান কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজগার, তাসবিহ-তাহলিল, নফল নামাজ ও দোয়া করে থাকেন। মনের ইচ্ছা জানিয়ে মহান আল্লাহর নিকট যে কোন দোয়া ই করা যেতে পারে। শবে কদর রাতে নফল নামাজের জন্য নির্দিষ্ট করে আলাদা কোন দোয়া নেই। তাই লাইলাতুল কদর বা শবে কদর নামাজ শেষে যেকোনো কল্যাণকর দোয়া করা উচিত হবে।
শবে কদর রাতে যে দোয়া পড়া উচিত
পবিত্র শবে কদর বা লাইলাতুল কদর অনুসন্ধানে শেষ দশকের প্রতিটি বিজোড় রাতে ইবাদতে মশগুল থাকা উত্তম। শবে কদরের এই রাত সম্পর্কিত হাদিসে বর্ণিত দোয়াটি করা উচিত। উম্মুল মু'মিনিন হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন - 'হে আল্লাহর রাসূল সাঃ! আমি যদি জানতে পারি যে, কোন রাতটি লাইলাতুল কদর - তাহলে তখন কোন দোয়া পড়বো?  তখন তিনি (রাসূল সাঃ) বললেন, তুমি বলো-
আরবি উচ্চারণ:
اللَّهمَّ إنَّك عفُوٌّ تُحِبُّ العفْوَ، فاعْفُ عنِّي
বাংলা উচ্চারণ:
'আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি'।
বাংলা অর্থ:
'হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন'। (তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫১৩)
সুতরাং রমজান মাসের শেষ দশকে এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়া উচিত। এখন আমরা শবে কদর নামাজের নিয়ম ও দোয়া গুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জেনে নেব।
![]()  | 
| শবে-কদর-নামাজের-নিয়ম। ছবি-এআই | 
তাছাড়াও মহান আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা লাভে কুরআনুল কারীমে তিনি বান্দার জন্য অনেক দোয়া তুলে ধরেছেন। এ সকল দোয়া নামাজের সেজদা, তাশাহুদসহ সকল ইবাদত-বন্দেগীতে পড়ার জন্য তাগিদ দিয়েছেন। আল কোরআন থেকে নেওয়া কিছু দোয়া নিচে উল্লেখ করা হলো-
আরবি উচ্চারণ:
رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ
বাংলা উচ্চারণ:
'রাব্বিগ ফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমীন'।
বাংলা অর্থ:
'হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার উপর রহম করুন; আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ রহমকারী'। (সূরা মুমিনুন, আয়াত নং ১১৮)
আরবি উচ্চারণ:
رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
বাংলা উচ্চারণ:
'রাব্বানা আমান্না ফাগ ফিরলানা ওয়ার হামনা ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমীন'।
বাংলা অর্থ:
'হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও আমাদের প্রতি রহম করুন। আপনি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু'! (সুরা মুমিনুন, আয়াত নং ১০৯)
আরবি উচ্চারণ:
رَبِّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ فَاغْفِرْ لِيْ
বাংলা উচ্চারণ:
'রাব্বি ইন্নি জ্বালামতু নাফসি ফাগ ফিরলি'।
বাংলা অর্থ:
'হে আমার প্রভু! নিশ্চয় আমি নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন'। (সুরা কাসাস, আয়াত নং ১৬)
আরবি উচ্চারণ:
رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
বাংলা উচ্চারণ:
'রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগ ফিরলানা জুনুবানা ওয়া কিনা আজাবান্নার'।
বাংলা অর্থ:
'হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং আপনি আমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করুন'। (সূরা আল ইমরান, আয়াত নং ১৬)
আরবি উচ্চারণ:
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ
বাংলা উচ্চারণ:
'রাব্বানা জ্বালামনা আংফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগ ফিরলানা ওয়া তারহামনা লানা কুনান্না মিনাল খাসিরিন'।বাংলা অর্থ:
'হে আমাদের প্রভু! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন, তবে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব'। (সূরা আরাফ, আয়াত নং ২৩)
আরবি উচ্চারণ:
رَبَّنَا اغْفِرْ لِيْ وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابُ
বাংলা উচ্চারণ:
'রাব্বানাগ ফিরলি ওয়া লিওয়ালিদাইয়া ওয়া লিল মুমিনিনা ইয়া ওমা ইয়াকুমুল হিসাব'।
বাংলা অর্থ:
'হে আমাদের প্রভু! যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন আপনি আমাকে, আমার বাবা-মাকে ও মু'মিনদেরকে রক্ষা করুন'। (সূরা ইব্রাহীম, আয়াত নং ৪১)
আরবি উচ্চারণ:
سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيْرُ
বাংলা উচ্চারণ:
'সামিনা ওয়া আত্বানা গুফরানাকা রব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাছির'। 
বাংলা অর্থ:
'আমরা (আপনার বিধান) শুনলাম এবং মেনে নিলাম। হে আমাদের রব! আমাদের ক্ষমা করুন। আপনার দিকেই তো আমাদের ফিরে যেতে হবে'। (সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ২৮৫)
আরবি উচ্চারণ:
رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلاَنَا
বাংলা উচ্চারণ:
'ওয়াফু আন্না ওয়াগ ফিরলানা ওয়ারহামনা আংতা মাওলানা, ফাংসুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন'।
বাংলা অর্থ: 
'হে আমাদের রব! যে বোঝা বহন করার সাধ্য আমাদের নেই, সে বোঝা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েন না। আমাদের পাপ মোচন করুন, আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। আপনিই তো আমাদের প্রভু'। (সূরা বাকারা, আয়াত নং ২৮৬)
আরবি উচ্চারণ:
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِيْنَ سَبَقُوْنَا بِالْإِيْمَانِ
বাংলা উচ্চারণ: 
'রাব্বানাগ ফিরলানা ওয়ালি ইখওয়া নিনাল্লাজিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি'।
বাংলা অর্থ: 
'হে আমাদের প্রভু! আমাদের ক্ষমা করুন এবং যারা আমাদের আগে ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদেরকেও ক্ষমা করুন'। (সূরা হাশর, আয়াত নং ১০)
আরবি উচ্চারণ:
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِيْ أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِيْنَ
বাংলা উচ্চারণ: 
'রাব্বানাগ ফিরলানা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা ওয়া ছাব্বিত আকদা মানা ওয়াংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন'।
বাংলা অর্থ: 
'হে আমাদের প্রভু! আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিন। আমাদের কাজের মধ্যে যেখানে আপনার সীমালংঘন হয়েছে, তা মাফ করে দিন। আমাদের কদমকে অবিচল রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন'। (সূরা আল ইমরান, আয়াত নং ১৪৭)
আরবি উচ্চারণ:
رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ
বাংলা উচ্চারণ: 
'রাব্বানা ফাগ ফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সায়্যি আতিনা ওয়া তাওয়াফ ফানা মা আল আবরার'।
বাংলা অর্থ:
'হে আমাদের প্রভু! সুতরাং আমাদের গুনাহ গুলো ক্ষমা করুন। আমাদের ভুল ত্রুটিগুলো দূর করে দিন এবং সৎকর্মশীল লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করুন'। (সূরা আল ইমরান, আয়াত নং ১৯৩)
প্রিয় পাঠক আশা করি, শবে কদর নামাজের নিয়ম ও দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন।
শবে কদরের ফজিলত
পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাত্রিতে শবে কদর রাত অন্তর্নিহিত রয়েছে। পবিত্র এই শবে কদর বা লাইলাতুল কদর রাতেই মহাগ্রন্থ আল কোরআন পূর্ণরূপে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, 'আপনি কি জানেন মহিমান্বিত রজনী কি? মহিমান্বিত রজনী হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ'। (সুরা আল কদর, আয়াত নং ২-৩) সুতরাং শবে কদরের ফজিলতের বিষয়টি কোরআন ও হাদিসের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। এই মহিমান্বিত রাতে ইবাদতের সৌভাগ্য লাভ করা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। 
অন্য এক হাদিসে হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, 'যে ব্যক্তি ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে এবং সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে, শবে কদরের রাতে দাঁড়ায়, তার আগেকার সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়'। বুখারী। এক হাদীসে হযরত আয়েশা রাঃ বলেন, নবীজি বলেছেন, 'তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান করো'। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২০১৭; সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১১৬৯)
আরো পড়ুন:
সর্বশেষ কথা - শবে কদর নামাজের নিয়ম ও দোয়া
পবিত্র রমজান মাস সকল গুনাহ মোচন করে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের মাস। এই মাসের মহিমান্বিত রজনী শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের রাতে মহাগ্রন্থ আল কোরআন পূর্ণরূপে নাযিল হয়েছে। শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের রাত একহাজার মাসের চেয়েও উত্তম। সুতরাং আমরা শবে কদরের এক রাত ইবাদত করলে হাজার মাসের ইবাদতের সওয়াব প্রাপ্ত হবো, যা আমাদের বেহেশত নসিবে সহায়ক হবে। শবে কদর নামাজের নিয়ম ও দোয়া লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
%20(3).webp)
%20(2).webp)
%20(1).webp)

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url